আমাদের পাপের জন্য ও ঈশ্বরের অভিশাপের জন্য যীশুকে কেন ক্রুশে মৃত্যুবরণ করতে হল ?
এখানে একটা প্রশ্ন থেকেই যায়, ঈশ্বর কি এক নিমেষেই সমস্ত পাপ ও অভিশাপ মুছে ফেলতে পারেন না, বা সহজেই ক্ষমা করতে পারেন না ?
ঈশ্বর যদি সর্বশক্তিমান হন, তবে তো এরকমটা করা তাঁর জন্য খুবই সহজ। তাহলে যীশুকে কেন মরতে হল ?
অন্য বিশ্বাসের লোকেরা বলে থাকেন, অপরের অন্যায় ও পাপের জন্য যীশুকে মৃত্যুবরণ করার কি কোনও প্রয়োজন ছিল ? ঈশ্বর তো দয়ালু ও মহান, তাহলে তো তিনি সব কিছুই বদলে ফেলতে পারেন, অতএব ক্রুশের কোনও প্রয়োজন নেই, বা যীশুর মৃত্যুবরণেরও কোনও প্রয়োজন নেই।
                              তো এই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর আমাদের জানা প্রয়োজন।
আমাদের বুঝতে হবে যে, বাইবেলের ঈশ্বর অতি দয়ালু ও অনুগ্রহকারী। কিন্তু যখন আমরা দয়া ও অনুগ্রহের কথা বলি, তখন এটির সংজ্ঞা থেকে আমরা জানতে পারি যে, দয়া ও অনুগ্রহ এমন একটি আশীর্বাদ, যেটি পাওয়ার জগ্যতা আমাদের মধ্যে নেই।
উদাহরণ স্বরুপ বলা যায়,
একজন অপরাধীকে যদি আদালতে হাজির করা হয়, আর বিচারক যদি সেই অপরাধীর ওপর দয়া দেখিয়ে তার অপরাধের শাস্তি না দিয়ে তাকে ক্ষমা করে দেন, তাহলে ন্যায়ের কি হল ? এখানে বিচারক অপরাধীর প্রতি দয়া তো করলেন, কিন্তু তিনি তার বিচারে ন্যায়পরায়ণতার বলিদান দিয়ে ফেললেন। এর অর্থ ন্যায়ের বলিদানের মাধ্যমে সেই অপরাধী ক্ষমা পেলেন।
                              তো যখনই আমরা সত্যিকারের ক্ষমা, অনুগ্রহ ও দয়ার কথা বলি, তখন সেগুলির দাম কাউকে মেটাতে হয়।
                              অন্য বিশ্বাসীদের কথানুযায়ী যদি আমরা ধরে নিই যে, ঈশ্বর কোনও কিছুর বিনিময় ছাড়াই আমাদের সকলকে ক্ষমা করেন, তাহলে তিনিও তো ন্যায় করলেন না, বিনিময় ছাড়া ক্ষমা করা তো অসম্ভব। ঈশ্বরকে অবশ্যই ন্যায়পরায়ণতাকে বিসর্জন দেওয়ার বিনিময়ে সকলের পাপ ক্ষমা করতে হবে।
                              কিন্তু বাইবেলের ঈশ্বর অনুগ্রহকারী, তিনি কখনই চান না যে, কোনও মানুষ তার পাপের জন্য অনন্তকালের দণ্ড ভোগ করুক। বাইবেলের ঈশ্বর অনুগ্রহকারী হলেও তিনি ন্যায়পরায়ণ। তার ন্যায়ে কোনও প্রকার কোনও খাত নেই, ন্যায় বিচার অনুযায়ী সমস্ত পাপীর শাস্তি হওয়া প্রয়োজন, আর সেই শাস্তি হল মৃত্যু।
তো যখন কেউ বলেন যে, ঈশ্বর সহজেই সব পাপ ও সমস্ত অধর্ম  কেন মুছে ফেলছেন না ? তখন তার এই কথাটি বলার অর্থ এটাই যে, ঈশ্বর অনুগ্রহ করুক, কিন্তু ন্যায়পরায়ণতার বলিদানের মাধ্যমে সেটা করুক।
                              বন্ধুরা, বাইবেলের ঈশ্বর এমনটা কখনই করবেন না, কারণ তিনি ন্যায়ের প্রতীক।
আরও একটি উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করি,
                    ধরুন, আপনি আপনার মোবাইল ফোনটি আপনার কোনও একজন বন্ধুকে কিছুক্ষণের জন্য দিলেন, আর ভুলবশত তার হাত থেকে ফোনটি নিচে পরে গেলো! আর ফোনের Display-টি ভেঙ্গে গেলো। আর আপনি আপনার বন্ধুকে বললেন, কোনও ব্যাপার না, তুমি চিন্তা কোরো না, আমি ঠিক করিয়ে নেব।
এখানে বোঝার বিষয় হল, আপনি তো আপনার বন্ধুকে ক্ষমা করে দিলেন, কিন্তু এটার অর্থ এই নয় যে, সেই ভেঙ্গে যাওয়া ফোনটিকে ঠিক করার জন্য আপনাকে কোনও মূল্য দিতে হবে না! আপনাকে অবশ্যই সেটিকে ঠিক করতে হলে তার জন্য মূল্য দিতে হবে।
                    এখানে আপনি নিজে মূল্যটি দিলেন, আপনি টাকা খরচ করে ফোনটিকে ঠিক করলেন কিন্তু আপনার বন্ধুকে কোনও মূল্য ছাড়াই ক্ষমা করলেন।
                              তো যখন আমরা ক্ষমার বিষয়ে কথা বলি, তখন সেই ক্ষমার পরিবর্তে তার মূল্যটিও কাউকে না কাউকে দিতে হয়।
আর আমাদের বাইবেলের ঈশ্বর অনুগ্রহকারী, দয়াশীল ও ক্ষমাশীল হওয়ার পাশাপাশি তিনি ন্যায়পরায়ণও, তিনি ন্যায়কে বিসর্জন দিয়ে আমাদের ক্ষমা করেন না, তিনি আপন প্রিয় পুত্র প্রভু যীশুর ক্রুশীয় রক্তের বিনিময়ে আমাদের ক্ষমা করেন।
রোমীয় ৬ অধ্যায় ২৩ পদে লেখা আছে - কেননা পাপের বেতন মৃত্যু; কিন্তু ঈশ্বরের অনুগ্রহ-দান আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টেতে অনন্ত জীবন।
তিনি আমাদের ক্ষমা তো করেছেনই, তার পাশাপাশি ন্যায়ও করেছেন, কারণ তিনি আমাদের ক্ষমা করার জন্য ন্যায়পরায়ণতাকে বলি দেননি বরং প্রভু যীশুকে পাঠিয়েছেন আমাদের পাপার্থক বলি রূপে।
                    অতএব বিনিময় ছাড়া পাপের ক্ষমা পাওয়া সম্ভব নয়, সেই কারণে প্রভু যীশুকে ক্রুশে প্রাণ দিতে হয়েছিল।
আমরা যদি বিশ্বাস করি যে, প্রভু যীশুর রক্ত আমাদের পাপ থেকে মুক্ত করেছে, তাহলে ঈশ্বর অনুগ্রহপূর্বক আমাদের প্রয়োজনীয় সমস্ত কিছুই দান করবেন।
রোমীয় ৮ অধ্যায় ৩২ পদে লেখা আছে - যিনি নিজ পুত্রের প্রতি মমতা করিলেন না, কিন্তু আমাদের সকলের নিমিত্ত তাঁহাকে সমর্পণ করিলেন, তিনি কি তাঁহার সহিত সমস্তই আমাদিগকে অনুগ্রহ-পূর্ব্বক দান করিবেন না?

Tags:- 
Christian Articles, বাংলা খ্রীষ্টীয় নিবন্ধ, bsbbca, bibleshikshabhaskar, BSB Ministry, Bengali Christian Blog, Bangla Gospel, Bengali Gospel, Preaching in Bengali Language, Bible Based Articles, বাংলা প্রচার, বাংলা যীশুর প্রচার, Bangla Christiyo Christio Khristiyo Khristio Prochar, BSB Gospel, Gospel Articles, Bangla Nibondho, Gospel Online, Online Gospel, বাইবেল প্রচার, বাইবেলের বাক্য, Blogger, Jesus Christ, যীশু খ্রীষ্ট,

0 Comments