আপনি হয়ত আপনার স্থানীয় মণ্ডলীতে কাউকে বলতে শুনেছেন বা কাউকে প্রচার করতে শুনেছেন যে, ঈশ্বর আমার সাথে কথা বলেছেন। অনেক বিশ্বাসীরাও সাক্ষ্য দেন যে, ঈশ্বর তাদের সাথে কথা বলেছেন।

বন্ধুরা, আপনারা কি কখনও ঈশ্বরের রব শুনতে পেয়েছেন ?

যদি না শুনতে পেয়ে থাকেন, তাহলে সর্বপ্রথম আপনাকে এটা জানতে হবে যে, ঈশ্বর কথা বলেন।

যিশাইয় ২৮ অধ্যায় ২৩ পদে লেখা আছে - তোমরা কাণ দেও, আমার রব শুন; কর্ণপাত কর, আমার বাক্য শুন।

প্রভু যীশু যোহন ১০ অধ্যায় ২৭ পদে বলেছেন - আমার মেষেরা আমার রব শুনে, আর আমি তাহাদিগকে জানি, এবং তাহারা আমার পশ্চাদগমন করে;

বাইবেল এটা প্রমাণ করে যে, ঈশ্বর কথা বলেন।

যদি আজ আপনার মনে হয় যে, ঈশ্বর আপনার সাথে কথা বলছেন না, তাহলে আগে আপনাকে প্রভু যীশুর ওপর বিশ্বাস করতে হবে ও তাঁর বাক্যকে আরও ভালোভাবে জানতে হবে। প্রভুতে বিশ্বাস করার পরেও যদি আপনি ঈশ্বরের রব না শুনতে পেয়ে থাকেন, তো সেটির অনেক ধরণের কারণ থাকতে পারে।

১. আপনি ঈশ্বরের রব এই জন্য শুনতে পাচ্ছেন না, কারণ – আপনি হয়ত এখনও ঈশ্বরের বাক্যকে ভালো ভাবে জানতে পারেননি। ঈশ্বরের রব শোনার জন্য ঈশ্বরের বাক্যকে ভালো ভাবে জানা প্রয়োজন।

একটি শিশুও অনেক ভিড়ের মধ্য থেকে নিজের মায়ের কণ্ঠস্বর চিনতে পারে। কারণ, সেই শিশুটি প্রত্যেকদিন তার মায়ের কণ্ঠস্বর শোনে।

যখন আপনি চেনা কারোর সাথে ফোনে কথা বলতে অভ্যস্ত থাকেন, আর যদি সেই চেনা ব্যক্তিটি কোনও অচেনা নম্বর থেকে আপনাকে ফোন করে, তাহলে আপনি খুব সহজেই তার কণ্ঠস্বর শুনে তাকে চিনে ফেলেন।

                    আপনি যখন ঈশ্বরের বাক্যে অভ্যস্ত হবেন, তখন আপনিও ঈশ্বরের রবকে ঠিকমতো বুঝতে শিখবেন, আর আপনি এটাও বুঝতে পারবেন যে, কোন শব্দটি ঈশ্বরের কাছ থেকে আর কোনটি ঈশ্বরের কাছ থেকে নয়।

ঈশ্বর কখনই তাঁর বাক্যকে উপেক্ষা করে বা তাঁর বাক্যের বিরোধী কোনও কথা বলেন না।

২. আপনি ঈশ্বরের রব এই জন্য শুনতে পাচ্ছেন না, কারণ আপনি ঈশ্বরকে প্রশ্ন করছেন না।

যদি আপনি ভেবে থাকেন, ঈশ্বর কোনও কারণ ছাড়াই আপনার সাথে কথা বলবেন, তাহলে সেটি আপনার ভুল ধারণা। ঈশ্বর তখনই বলেন, যখন আমাদের মনে তাঁর জন্য অনেক ধরণের প্রশ্ন থাকে।

হতে পারে আপনার জীবনে কোনও বিষয় নিয়ে অনেক বড়ো সংশয় তৈরি হয়েছে, আর আপনি ঈশ্বরের কাছে যদি সেই বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করেন, তাহলে অবশ্যই তিনি তাঁর সময় মতো আপনাকে উত্তর দেবেন।

৩. আপনি ঈশ্বরের শব্দ এই কারণে শুনতে পাচ্ছেন না, কারণ আপনার জীবন অন্যান্য শব্দে ঘেরা রয়েছে।

যখন আপনি কোনও ব্যক্তির সাথে কথা বলেন, আর সেই সময় যদি আশে পাশে অনেক মানুষের চেঁচামিচির আওয়াজ থাকে, তাহলে আপনি আপনার সামনের ব্যক্তিটির সাথে ঠিকমতো কথাবার্তা বলতে পারবেন না।

যদি আপনার জীবন অন্যান্য শব্দে ঘেরা থাকে, তবে আপনি কখনই ঈশ্বরের রবকে বুঝতে পারবেন না।

ঈশ্বরের রব শোনার জন্য আপনাকে অন্যান্য শব্দগুলি থেকে সরে আসতে হবে, আপনাকে একান্তে নীরব কোনও স্থানে আসতে হবে।

গীতসংহিতা ৪৬ এর গীত ১০ পদের একটি অংশে লেখা আছে - তোমরা ক্ষান্ত হও; জানিও, আমিই ঈশ্বর;

যখন প্রভু যীশু পিতা ঈশ্বরের সাথে কথা বলতে যেতেন, তখন তিনিও একান্তে কোনও নীরব স্থানে গিয়ে প্রার্থনা করতেন।

মথি ১৪ অধ্যায় ২৩ পদে লেখা আছে - পরে তিনি লোকদিগকে বিদায় করিয়া বিরলে প্রার্থনা করিবার নিমিত্ত পর্ব্বতে উঠিলেন। সন্ধ্যা হইলে তিনি সেই স্থানে একাকী থাকিলেন। 

৪. আমরা ঈশ্বরের রব এই কারণে শুনতে পাই না, কারণ আমরা সেগুলিই শুনতে চাই, যেগুলি আমরা শুনতে পছন্দ করি, আমরা নিজেদের ইচ্ছানুসারে ঈশ্বরের কাছ থেকে উত্তর পেতে চেষ্টা করি।

যদি আপনাকে ঈশ্বরের শব্দ শুনতে হয়, তবে তিনি যা কিছুই করতে বলছেন বলে আপনার মনে হয়, সেগুলি করার জন্য আপনাকে প্রস্তুত থাকতে হবে। হতে পারে সেগুলি আপনার ইচ্ছার বিরুদ্ধে, তবুও আপনাকে সেগুলির জন্য প্রস্তুত হতে হবে।

যদি আপনার মনে হয় যে, ঈশ্বর আপনাকে কিছু করার জন্য বলছেন, আর যদি আপনি সেটিকে উপেক্ষা করে ফেলেন, আর এরকমটা যদি আপনি প্রতিনিয়তই করতে থাকেন, তবে ঈশ্বর আপনার সাথে ভবিষ্যতে আর কোনও কথাই বলতে চাইবেন না, কারণ আপনি তাঁর বাক্যকে গুরুত্ব দেননি।

মা-বাবা যখন তাদের সন্তানের ইচ্ছানুসারে কিছু বলেন, তখন তাদের সন্তান সেই কথাটি শোনে। কিন্তু যখন তারা তাদের সন্তানের ইচ্ছার বিপরীত কিছু বলেন, তখন তাদের সন্তান সেই কথাটির গুরুত্ব দিতে চায় না।

                                        যদি আপনি এই ধরণের স্বভাবের ব্যক্তি হয়ে থাকেন, আর যদি আপনি ঈশ্বরের কাছ থেকে সেগুলিই শুনতে চেয়ে থাকেন, যেগুলি আপনার মনের ইচ্ছে, তাহলে সেটি ঈশ্বরের রব শোনার জন্য সব থেকে বড়ো বাধা হয়ে দাঁড়াবে।

৫. আপনি ঈশ্বরের রব এই জন্য শুনতে পাচ্ছেন না, কারণ আপনি ঈশ্বরকে ত্যাগ করে পাপের পেছনে ছুটে চলেছেন।

যখন দুজন ব্যক্তি পরস্পর কথা বলেন, তখন তারা যতটা কাছাকাছি থাকবেন, তততা ভালোভাবে একে অপরের কথা শুনতে পাবেন। কিন্তু যদি দূরত্ব বাড়ানো হয়, তবে তারা পরস্পরের কথা ভালোভাবে শুনতে ব্যর্থ হবেন।

পাপ আমাদের সাথে ঈশ্বরের দূরত্ব বাড়িয়ে দেয়, সেই কারণে ঈশ্বরের শব্দ আমরা শুনতে অনেক সময় ব্যর্থ হই।

রাজা দাউদ গীতসংহিতা ৬৬ এর গীত ১৮ পদে বলেছেন - যদি চিত্তে অধর্ম্মের প্রতি তাকাইতাম,

তবে প্রভু শুনিতেন না।

বন্ধুরা,

 যদি আপনারা এখনও আপনাদের জীবনে পাপের সাথে আপস করছেন, তবে এটি ঈশ্বরের রব শোনার ক্ষেত্রে একটি বড়ো বাধা হয়ে দাঁড়াবে।

যখন আপনি পাপের পেছনে না ছুটে ঈশ্বরের পেছনে ছুটতে শিখবেন, তখন আপনিও রাজা দাউদের মতো বলতে পারবেন - ১৯ কিন্তু সত্যই ঈশ্বর শুনিয়াছেন;

তিনি আমার প্রার্থনার রবে অবধান করিয়াছেন।

২০ ধন্য ঈশ্বর, যিনি আমার প্রার্থনা,

এবং আমা হইতে নিজ দয়া, দূর করেন নাই।

- গীতসংহিতা ৬৬ এর গীত ১৯ থেকে ২০ পদ।


Tags:- 

Christian Articles, বাংলা খ্রীষ্টীয় নিবন্ধ, bsbbca, bibleshikshabhaskar, BSB Ministry, Bengali Christian Blog, Bangla Gospel, Bengali Gospel, Preaching in Bengali Language, Bible Based Articles, বাংলা প্রচার, বাংলা যীশুর প্রচার, Bangla Christiyo Christio Khristiyo Khristio Prochar, BSB Gospel, Gospel Articles, Bangla Nibondho, Gospel Online, Online Gospel, বাইবেল প্রচার, বাইবেলের বাক্য, Blogger, Jesus Christ, যীশু খ্রীষ্ট,


0 Comments