বাইবেল অনুযায়ী তাদেরকেই বাপ্তিস্ম দেওয়া উচিত, যারা মন পরিবর্তন করে সুসমাচারে বিশ্বাস করেছেন এবং প্রভু যীশু খ্রীষ্টকে নিজেদের ত্রাণকর্তা রূপে স্বীকার করেছেন।

অবিশ্বাসীদের এবং শিশুদের বাপ্তিস্ম দেওয়ার জন্য বাইবেল আমাদের কখনই অনুমতি দেয় না।

একটি শিশুর মধ্যে কখনই নিজের পাপ সম্পর্কে কোনও ধারণা থাকে না, তাই পাপ থেকে মন পরিবর্তন করারও কোনও প্রশ্ন ওঠে না, এছাড়াও একটি নবজাত শিশু কখনই প্রভু যীশুর শিষ্য হতে পারে না।

অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন যে, যদি শিশুদের বাপ্তিস্ম দেওয়াটা বাইবেল ভিত্তিক না হয়ে থাকে, তাহলে কিছু কিছু মণ্ডলীতে কেন শিশুদের বাপ্তিস্ম দেওয়া হয়ে থাকে ?

তো এর স্পষ্ট উত্তর হল – সেই সমস্ত মণ্ডলীগুলি বাইবেলের বাক্যকে উপেক্ষা করে মানুষের দ্বারা তৈরী নিয়মাবলী অনুযায়ী শিশুদের বাপ্তিস্ম দিয়ে থাকে।

কমপক্ষে তৃতীয় শতাব্দীর পর থেকে শিশুদের বাপ্তিস্ম দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। সেই সময়কার ক্যাথোলিক মণ্ডলীগুলির পরিচারকগণ শিক্ষা দিচ্ছিলেন যে, বাপ্তিস্ম আমাদের জীবনের সমস্ত পাপগুলিকে ধৌত করে, এর অর্থ হল – বাপ্তিস্ম গ্রহণ না করে যদি কোনও ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেন, তাহলে সেই ব্যক্তিটি তার পাপের মধ্যেই মৃত্যুবরণ করেন এবং তার স্থান হয় নরক, আর সেই কারণেই নবজাত শিশুদেরও তারা বাপ্তিস্ম দিতে শুরু করেন।

আসুন আমরা বাইবেল থেকে এমন কিছু বাক্য দেখি, যেগুলি তারা শিশু বাপ্তিস্মের প্রক্রিয়ার সপক্ষে ব্যবহার করে থাকেন।

প্রেরিত ১০ অধ্যায় ১ থেকে ২ পদ

1 কৈসরিয়াতে কর্ণীলিয় নামে এক ব্যক্তি ছিলেন, তিনি ইতালীয় নামক সৈন্যদলের এক জন শতপতি। 2 তিনি ভক্ত ছিলেন, এবং সমস্ত পরিবারের সহিত ঈশ্বরকে ভয় করিতেন, তিনি লোকদিগকে বিস্তর দান করিতেন, এবং সর্ব্বদা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করিতেন।

এই বাক্যদুটিতে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, কর্ণীলিয় এবং তার পরিবার ঈশ্বরকে ভয় করতেন, কিন্তু তবুও তার পরিবারের মধ্যে আমরা শিশুদেরকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারি না, কারণ একটি নবজাত শিশু ঈশ্বরের ভয় সম্বন্ধে কোনও ধারণা রাখতে পারে না।

প্রেরিত ১৬ অধ্যায় ৩১ থেকে ৩৩ পদ –

31 তাঁহারা কহিলেন, তুমি ও তোমার পরিবার প্রভু যীশুতে বিশ্বাস কর, তাহাতে পরিত্রাণ পাইবে। 32 পরে তাঁহারা তাহাকে এবং তাহার বাটীতে উপস্থিত সকল লোককে ঈশ্বরের বাক্য বলিলেন। 33 আর রাত্রির সেই দণ্ডেই সে তাঁহাদিগকে লইয়া তাঁহাদের প্রহারের ক্ষত সকল ধৌত করিল; এবং সে আপনি ও তাহার সকল লোক অবিলম্বে বাপ্তাইজিত হইল।

ওপরের ৩৩ পদ অনুযায়ী অনেকে বলে থাকেন যে, সেখানে লেখা আছে ‘সকল লোক বাপ্তাইজিত হইল’, অতএব সেখানে শিশুদেরকেও অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়া যেতে পারে।

কিন্তু এই দাবী সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন! কারণ, ওপরের ৩৩ পদটির প্রসঙ্গ আমরা ৩১ পদে পেয়ে থাকি, সেখানে প্রভু যীশুতে বিশ্বাস করার কথা বলা হয়েছে। আর আমরা জানি যে, একটি নবজাত শিশু কখনই প্রভু যীশুতে বিশ্বাস করতে পারে না।

     অনেকে দাবী করে থাকেন, বাপ্তিস্ম হল নতুন নিয়মের ত্বকছেদ প্রক্রিয়া। কিন্তু এই দাবী সত্যিই অদ্ভুত!

পবিত্র বাইবেলে এমন কোনও বাক্যের অস্তিত্ব নেই, যেখানে লেখা আছে যে, বাপ্তিস্ম হল নতুন নিয়মের ত্বকছেদ প্রক্রিয়া।

কিন্তু তবুও তারা কিছু কিছু বাক্য আমাদের সামনে তুলে ধরে আমাদেরকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন।

আসুন আমরা বাক্যগুলি দেখি।

কলসীয় ২ অধ্যায় ১১ থেকে ১২ পদ

11 আর তাঁহাতেই তোমরা অহস্তকৃত ত্বক্‌ছেদে, মাংসের দেহ বস্ত্রবৎ পরিত্যাগে, খ্রীষ্টের ত্বক্‌ছেদে, ছিন্নত্বক্‌ হইয়াছ12 ফলতঃ বাপ্তিস্মে তাঁহার সহিত সমাধিপ্রাপ্ত হইয়াছ, এবং তাহাতে তাঁহার সহিত উত্থাপিতও হইয়াছ, ঈশ্বরের কার্য্যসাধনে বিশ্বাস দ্বারা হইয়াছ, যিনি তাঁহাকে মৃতগণের মধ্য হইতে উঠাইয়াছেন। 

ওপরের ১১ পদ এবং ১২ পদ প্রসঙ্গ অনুযায়ী বিশ্লেষণ করে আমরা শিক্ষা পাই যে, অহস্তকৃত ত্বকছেদ হল খ্রীষ্টের দ্বারা আত্মীক ত্বকছেদ। জলে বাপ্তিস্ম কখনই অহস্তকৃত নয়, সেই জন্য বাপ্তিস্মকে নতুন নিয়মের ত্বকছেদ বলা চলে না, আর বাপ্তিস্ম বিশ্বাসের পরবর্তী পদক্ষেপ, অতএব বাপ্তিস্ম শিশুদের জন্য নয়।

মথি ২৮ অধ্যায় ১৯ থেকে ২০ পদে প্রভু যীশু তাঁর শিষ্যদের শেষ যে আজ্ঞা দিয়েছিলেন, সে বিষয়ে নিশ্চয়ই আমরা অবগত রয়েছি, সেখানে লেখা আছে –

19 অতএব তোমরা গিয়া সমুদয় জাতিকে শিষ্য কর; পিতার ও পুত্রের ও পবিত্র আত্মার নামে তাহাদিগকে বাপ্তাইজ কর20 আমি তোমাদিগকে যাহা যাহা আজ্ঞা করিয়াছি, সে সমস্ত পালন করিতে তাহাদিগকে শিক্ষা দেও। আর দেখ, আমিই যুগান্ত পর্য্যন্ত প্রতিদিন তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে আছি।

প্রভু যীশু আমাদের শিখিয়েছেন, কোনও ব্যক্তিকে বাপ্তিস্ম দেওয়ার পূর্বে সেই ব্যক্তিকে তাঁর শিষ্য করে তুলতে হবে, আর নবজাত শিশুরা কখনই কারও শিষ্য হয়ে উঠতে পারে না, এছাড়াও প্রভু যীশু শিখিয়েছেন, যাদের বাপ্তিস্ম দেওয়া হবে, তাদেরকে তাঁর আজ্ঞা সকল পালন করতে শেখাতে হবে, কিন্তু একটি শিশুর পক্ষে যেমন শিষ্য হয়ে ওঠা সম্ভব নয়, ঠিক তেমনই আজ্ঞা সকল পালন করার বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণ করাও সম্ভব নয়, অতএব শিশুদের বাপ্তিস্ম দেওয়াটা ভিত্তিহীন এবং বাইবেল ভিত্তিক নয়।

 

Tags:- 

Christian Articles, বাংলা খ্রীষ্টীয় নিবন্ধ, bsbbca, bibleshikshabhaskar, BSB Ministry, Bengali Christian Blog, Bangla Gospel, Bengali Gospel, Preaching in Bengali Language, Bible Based Articles, বাংলা প্রচার, বাংলা যীশুর প্রচার, Bangla Christiyo Christio Khristiyo Khristio Prochar, BSB Gospel, Gospel Articles, Bangla Nibondho, Gospel Online, Online Gospel, বাইবেল প্রচার, বাইবেলের বাক্য, Blogger, Jesus Christ, যীশু খ্রীষ্ট, child baptism, infant baptism,

0 Comments