আমরা এখন একবিংশ শতাব্দীতে বাস করছি। এই একবিংশ শতাব্দীতে বিজ্ঞান এতটাই উন্নত হয়েছে যে, মানুষ এখন পৃথিবী ছেড়ে অন্য গ্রহে বসতি স্থাপন করার কথাও কল্পনা করতে পারে।

বিজ্ঞানের উন্নতিসাধনের কারণে বিগত কয়েক দশকে অনেক খ্রীষ্ট বিশ্বাসীই প্রভু যীশুকে ত্যাগ করেছেন, তারা মনে করেন – বাইবেল একটি কাল্পনিক গ্রন্থ।

বিজ্ঞানের উন্নতির ফলে অনেক মানুষই আজ ঈশ্বরের অস্তিত্বকে অস্বীকার করে।

অনেক বিজ্ঞানীরাও মনে করেন – ঈশ্বরের কোনও অস্তিত্ব নেই এবং এই জগৎ নিজের থেকেই সৃষ্টি হয়েছে।

যেসমস্ত বিজ্ঞানীরা বলে থাকেন যে, ঈশ্বরের কোনও অস্তিত্ব নেই, তারা সৃষ্টির যে দুটি নিয়ম, সেগুলির মধ্যে একটি নিয়মকেই স্বীকার করেন, আর সেটি হল – প্রাকৃতিক নিয়ম বা Natural Law, কিন্তু তারা অপার্থিব নিয়ম বা Supernatural Law-কে স্বীকার করেন না।

যাই হোক, আজ আমরা বাইবেল থেকে এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ চারটি বিষয় তুলে ধরব, যেগুলি বিজ্ঞানের উন্নতিসাধনের বহু পূর্বেই স্পষ্টভাবে বর্ণিত রয়েছে।

১. পৃথিবী গোলাকারঃ-

যিশাইয় ৪০ অধ্যায় ২২ পদে লেখা আছে –

তিনিই পৃথিবীর সীমাচক্রের উপরে উপবিষ্ট;

তন্নিবাসিগণ ফড়িঙ্গস্বরূপ; তিনি চন্দ্রাতপের ন্যায় আকাশমণ্ডল বিস্তার করেন,

বাসতাম্বুর ন্যায় তাহা টাঙ্গাইয়া দেন।

 

বাইবেলে আজ থেকে প্রায় ২৮০০ বছর আগেই বর্ণনা করা হয়েছে যে, পৃথিবীর আকৃতি গোলাকার। বিজ্ঞান উন্নত হওয়ার আগে পর্যন্ত মানুষ মনে করত - পৃথিবীর আকৃতি সমতল, কিন্তু আজ এটা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত যে, পৃথিবী সত্যিই গোলাকার।

২. পৃথিবী শূন্যের ওপর অবস্থান করছেঃ-

 বাইবেল আমাদের শিক্ষা দেয় যে, পৃথিবী শূন্যের ওপর ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে।

আগেকার দিনে গ্রীক দেশের লোকেরা মনে করত, তাদের দেবতা অ্যাটলাস এই পৃথিবীকে নিজের কাঁধে বসিয়ে রেখেছে। কিন্তু পৃথিবী যে মহা শূন্যের ওপর কোনও কিছুর সাহায্য ছাড়াই অবস্থান করছে, সেই বিষয়টি সেই সময়ের লোকেদের ভাবনা চিন্তার বাইরে ছিল।

কিন্তু বাইবেলে অনেক আগে থেকেই এই বিষয়টি বর্ণিত আছে যে, পৃথিবী শূন্যের ওপরেই অবস্থান করছে, যা আজ বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত।

ইয়োব ২৬ অধ্যায় ৭ পদে লেখা আছে –

তিনি শূন্যের উপরে উত্তর কেন্দ্র বিস্তার করিয়াছেন,

অবস্তুর উপরে পৃথিবীকে ঝুলাইয়াছেন,

 

৩. সমুদ্রের নীচে পাহাড় আছেঃ-

আমরা প্রায় প্রত্যেকেই পাহাড় দেখেছি, কিন্তু সমুদ্রের নীচে যেসমস্ত পাহাড়গুলি রয়েছে, সেগুলি হয়ত আমরা দেখিনি অথবা টিভিতে বা ইন্টারনেটে দেখেছি। বিজ্ঞান আজ আমাদের বলে যে, সমুদ্রের নীচেও পাহাড় রয়েছে, কিন্তু বাইবেল আজ থেকে বহু বছর আগেই এই বিষয়ে বর্ণনা করেছে।

যোনা ২ অধ্যায় ৫ থেকে ৬ পদে লেখা আছে –

5 জলরাশি আমাকে ঘেরিল, প্রাণ পর্য্যন্ত উঠিল,

জলধি আমাকে বেষ্টন করিল, মৃণাল আমার মস্তকে জড়াইল।

6 আমি পর্ব্বতগণের মূল পর্য্যন্ত নামিয়া গেলাম;

আমার পশ্চাতে পৃথিবীর অর্গল সকল চিরতরে বদ্ধ হইল;

তথাপি, হে আমার ঈশ্বর সদাপ্রভু,

তুমি আমার প্রাণকে কূপ হইতে উঠাইলে।

 

৪. সমুদ্রে রাস্তা আছেঃ-

গীতসংহিতা ৮ এর গীত ৮ পদে লেখা আছে –

শূন্যের পক্ষিগণ, এবং সাগরের মৎস্য,

যাহা কিছু সমুদ্রপথগামী।

 

ইংরেজী বাইবেলে পদটি এরকম লেখা আছে –

The fowl of the air, and the fish of the sea, and whatsoever passeth through the paths of the seas. (KJV)

Paths of the seas এর অর্থ হল – সমুদ্রের রাস্তা।

প্রায় ৩০০০ বছর আগে বাইবেলে ঈশ্বর সমুদ্রের রাস্তার বিষয়ে বর্ণনা করেছেন, কিন্তু ১৮৫৫ খ্রীষ্টাব্দে Matthew Fontaine Maury নামক একজন সমুদ্র বিজ্ঞানী (Oceanographer) এই বিষয়টিকে নিশ্চিত করেছেন, তার লেখা বই – “Physical Geography Of The Sea”-তে তিনি সমুদ্রের পথ সম্বন্ধে বর্ণনা করেছেন।

একবার Maury খুব অসুস্থ হয়ে পরেছিলেন, তখন তিনি তার ছেলেকে তার কাছে বাইবেল পাঠ করার কথা বলেছিলেন। তার ছেলে বাইবেল থেকে গীতসংহিতা ৮ এর গীত ৮ পদটি পাঠ করছিল, যেখানে সমুদ্রের রাস্তার বিষয়ে বর্ণনা করা আছে, আর সেই পদটি শোনার পর থেকেই তার মনে সমুদ্রের পথ সন্ধানের ইচ্ছা প্রবল হয়ে ওঠে।


Tags:- 

Christian Articles, বাংলা খ্রীষ্টীয় নিবন্ধ, bsbbca, bibleshikshabhaskar, BSB Ministry, Bengali Christian Blog, Bangla Gospel, Bengali Gospel, Preaching in Bengali Language, Bible Based Articles, বাংলা প্রচার, বাংলা যীশুর প্রচার, Bangla Christiyo Christio Khristiyo Khristio Prochar, BSB Gospel, Gospel Articles, Bangla Nibondho, Gospel Online, Online Gospel, বাইবেল প্রচার, বাইবেলের বাক্য, Blogger, Jesus Christ, যীশু খ্রীষ্ট,

0 Comments