মেষের বেশে কেন্দুয়া | BSB Bengali Christian Articles
মথি ৭ অধ্যায় ১৫
পদে প্রভু যীশু বলেছেন –
ভাক্ত
ভাববাদিগণ হইতে সাবধান; তাহারা মেষের বেশে তোমাদের
নিকটে আইসে, কিন্তু অন্তরে গ্রাসকারী কেন্দুয়া।
মেষের বেশে গ্রাসকারী
কেন্দুয়া, এই পরিভাষাটি সেই সমস্ত লোকদেরকে উদ্দেশ্যে করে ব্যবহার করা হয়েছে, যাদেরকে
বাহ্যিকভাবে বিচার করলে মনে হয় তারা নম্রতা, ভদ্রতা ও আত্মীকতায় পরিপূর্ণ, কিন্তু আভ্যন্তরীণ
দিক থেকে তাদের অন্তরে সমস্ত রকম মন্দতা বিরাজ করে।
প্রেরিত ২০ অধ্যায়
২৯ থেকে ৩০ পদে পৌল বলেছেন –
29 আমি জানি, আমি গেলে পর দুরন্ত কেন্দুয়ারা
তোমাদের মধ্যে প্রবেশ করিবে, পালের প্রতি মমতা করিবে না; 30 এবং তোমাদের মধ্য হইতেও কোন কোন
লোক উঠিয়া শিষ্যদিগকে আপনাদের পশ্চাৎ টানিয়া লইবার জন্য বিপরীত কথা কহিবে।
শয়তান মণ্ডলীর প্রকৃত
মেষের পালদের পথভ্রষ্ট করবার জন্য প্রথম থেকেই মেষের বেশে কেন্দুয়াদের পাঠিয়ে চলেছে।
এই কেন্দুয়াদের কবলে পরে অনেক বিশ্বাসীই আজ ঈশ্বরের সত্যতা ভুলে গিয়ে বিপথগামী হয়েছে
এবং ভবিষ্যতেও হতে চলেছে, কারণ তারা ঈশ্বরের বাক্যকে নিজেদের হৃদয়ে ধারণ করে না।
খ্রীষ্ট বিশ্বাসী হিসেবে
আমাদের প্রত্যেককেই ঈশ্বরের বাক্যে স্থির থাকতে হবে, যেন আমরা শয়তানের সমস্ত রকম চালাকিগুলি
থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারি।
আজ আমরা এই নিবন্ধটিতে
কেন্দুয়াদের কীভাবে চিহ্নিত করব, সেই সম্পর্কে আলোচনা করতে চলেছি।
১. আপনি তাদের
ভুল সংশোধন করে দিতে চাইলে তারা তা প্রত্যাখ্যান করবেঃ-
একজন প্রকৃত খ্রীষ্ট বিশ্বাসীর
চরিত্রের মধ্যে প্রেম, নম্রতা, মাধুর্য্য, সহনশীলতা ইত্যাদি ভালো গুনগুলি পরিলক্ষিত
হয়। কিন্তু যখন আপনি একজন মেষের বেশধারী কেন্দুয়ার সাথে মিলিত হবেন, তখন আপনি সেই ভালো
গুনগুলির অভাব তার মধ্যে স্পষ্টভাবেই উপলব্ধি করতে পারবেন। যদি সেই ব্যক্তি কোনও ভুল-ভ্রান্তি
করে থাকেন, আর আপনি যদি তাকে সংশোধন করতে চেষ্টা করেন, তাহলে সেই ব্যক্তির অন্তরে একপ্রকার
ক্রোধের উদয় হবে। সেই ব্যক্তিটি আপনার কোনও কথাই শুনতে ইচ্ছুক হবেন না, কারণ ব্যক্তিটি
প্রকৃত খ্রীষ্টের অনুসারী নন এবং ঈশ্বরের বাক্য অনুযায়ী চলেন না। তাই আপনি সেই ব্যক্তিটিকে
একজন কেন্দুয়া হিসেবে চিহ্নিত করতে পারেন এবং সেই ব্যক্তি থেকে সাবধান হতে পারেন।
২. তারা নিজেদের
উদ্দেশ্য সাধনের জন্য অন্যদের ব্যবহার করেঃ-
মণ্ডলী হল খ্রীষ্টের দেহ। বাইবেলের নতুন নিয়মে আমরা দেখতে
পাই যে, প্রভু যীশুর প্রেরিতগণ মণ্ডলীর বিষয়ে অনেক চিন্তিত ছিলেন, আর সেই কারণে তারা
মণ্ডলীর মেষদের বিপথগামী হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য বেশ কিছু পত্র লিখেছিলেন।
প্রেরিতগণ তাদের নিজেদের জীবন অন্যদের জন্য সমর্পণ করেছিলেন, তারা কখনই তাদের নিজেদের
উদ্দেশ্য সাধনের জন্য অন্যদের ব্যবহার করেননি। বাস্তবে একজন পরিত্রাণপ্রাপ্ত ব্যক্তি
নিজেদের সুবিধার জন্য অন্যদের ব্যবহার করেন না বরং তিনি নিজেকে অন্যদের জন্য সমর্পণ
করেন, যেন অন্যেরা সেই ব্যক্তির দ্বারা ঈশ্বরের অনুগ্রহ লাভ করতে পারে।
বেশধারী কেন্দুয়া নিজের রাজ্য স্থাপিত করতে চায়,
ঈশ্বরের রাজ্য নয়। আর ঠিক সেই কারণেই তারা ঈশ্বরের বাক্যকে উপেক্ষা করে নিজেদের বিচার-বুদ্ধি
অনুযায়ী চলতে পছন্দ করে এবং অন্যদেরকেও তাদের বিচার-বুদ্ধি অনুযায়ী চালনা করতে চেষ্টা
করে।
আজকাল আমরা সরাসরি
বা বিভিন্ন মাধ্যমের দ্বারা দেখতে পাচ্ছি যে, এমন অনেক প্রচারকেরাই উঠেছেন, যারা নিজেদের
সুবিধার জন্য অন্যদের শোষণ করে চলেছেন। এমনকি তারা ঈশ্বরের বাক্যের ভুল ব্যখ্যাকে হাতিয়ার
হিসেবে ব্যবহার করছেন।
বন্ধুরা, যদি আপনাদের মণ্ডলীতেও এই ধরণের প্রচারকেরা থাকেন,
যারা নিজেদের স্বার্থের জন্য অন্যদের নিয়ন্ত্রণ করেন এবং ব্যবহার করেন, তাহলে অবশ্যই
আপনারা সেই ব্যক্তির কাছ থেকে দূরে থাকুন। সেই ব্যক্তি তো বাহ্যিক দিক থেকে একজন নির্দোষ
মেষের মতো, কিন্তু তার অন্তরে গ্রাসকারী কেন্দুয়ার অবস্থিতি রয়েছে।
৩. ফল দ্বারা তাদের চিহ্নিত করতে পারবেনঃ-
মথি ৭ অধ্যায় ১৬ থেকে ১৮ পদে প্রভু যীশু বলেছেন –
16 তোমরা তাহাদের ফল দ্বারাই তাহাদিগকে
চিনিতে পারিবে। লোকে কি কাঁটাগাছ হইতে দ্রাক্ষাফল, কিম্বা শিয়ালকাঁটা হইতে ডুমুরফল
সংগ্রহ করে? 17 সেই প্রকারে প্রত্যেক ভাল গাছে ভাল ফল
ধরে, কিন্তু মন্দ গাছে মন্দ ফল ধরে। 18 ভাল গাছে মন্দ ফল ধরিতে পারে না, এবং মন্দ গাছে ভাল ফল ধরিতে পারে না।
এটিই হল সব থেকে ভালো
উপায় সেই কেন্দুয়াদের চিহ্নিত করার জন্য।
আত্মার ফল বা গুনগুলি
(প্রেম, আনন্দ, শান্তি, দীর্ঘসহিষ্ণুতা,
মাধুর্য্য, মঙ্গলভাব, বিশ্বস্ততা,
মৃদুতা, ইন্দ্রিয়দমন) একজন আত্মীক ব্যক্তির মধ্যেই পরিলক্ষিত
হয়, কিন্তু একজন কেন্দুয়া শত চেষ্টা করলেও এই ফল বা গুনগুলি নিজের মধ্যে উৎপন্ন করতে
সক্ষম হয় না। সে যদি আত্মার ফল বা গুনগুলির মতো অভিনয় করতে চেষ্টাও করে, তবে শীঘ্রই
তার সত্যতা প্রকাশ পাবে এবং আপনি তাকে চিহ্নিত করতে পারবেন।
৪. মেষপালককে
ভালোভাবে জানুনঃ-
আপনি যদি মেষপালককে অর্থাৎ
প্রভু যীশু খ্রীষ্টকে ভালোভাবে জানতে পারেন, তাহলে তাঁর শিক্ষা অনুযায়ী যারা চলে অর্থাৎ
তাঁর মেষদেরও ভালোভাবে জানতে পারবেন। আপনি যদি খ্রীষ্টের শিক্ষার বিপরীত গুন কোনও বিশ্বাসীর
মধ্যে উপলব্ধি করতে পারেন, তাহলে সেই ব্যক্তি হতে পারেন একজন মেষের বেশধারী কেন্দুয়া।
যোহন ১০ অধ্যায় ২৭
পদে প্রভু যীশু বলেছেন –
আমার
মেষেরা আমার রব শুনে, আর আমি তাহাদিগকে জানি, এবং তাহারা আমার পশ্চাদগমন করে;
অতএব, যারা প্রভু যীশুর
শিক্ষা অনুযায়ী চলে না, তারা প্রভুর মেষও নয়।
তাই আমার প্রিয় বন্ধুরা, ঈশ্বরের বাক্যকে ভালোভাবে
জানুন, কারণ তিনি তাঁর বাক্যের মাধ্যমেই আমাদের চেতনা দান করেন এবং সঠিক পথে চলতে সাহায্য
করেন।
Tags:-
Christian Articles, বাংলা খ্রীষ্টীয় নিবন্ধ, bsbbca, bibleshikshabhaskar, BSB Ministry, Bengali Christian Blog, Bangla Gospel, Bengali Gospel, Preaching in Bengali Language, Bible Based Articles, বাংলা প্রচার, বাংলা যীশুর প্রচার, Bangla Christiyo Christio Khristiyo Khristio Prochar, BSB Gospel, Gospel Articles, Bangla Nibondho, Gospel Online, Online Gospel, বাইবেল প্রচার, বাইবেলের বাক্য, BSB Evangelical Team, Blogger, Jesus Christ, যীশু খ্রীষ্ট, Wolf, Wolves, Sheep,
0 Comments