গুড ফ্রাইডে কি এবং এই দিনটি কেন পালন করা হয় ? | BSB Bengali Christian Articles
আমাদের দেশে এমন অনেক
মানুষ রয়েছেন, যাদের মনে একটি প্রশ্ন অবশ্যই জেগে ওঠে, সেটি হল – গুড ফ্রাইডে কি এবং
কেনই বা তা পালন করা হয় ?
আজ আমরা এই বিষয়টি নিয়েই আলোচনা করতে চলেছি।
বিশ্বব্যাপী গুড ফ্রাইডে
পালন করা হয় প্রভু যীশু খ্রীষ্টের ক্রুশীয় বলিদানকে স্মরন করার উদ্দেশ্যে।
আজ থেকে প্রায় ২০০০ বছরের
কিছু বেশী সময় আগে ইস্রায়েলীয় ইহুদী ধর্মগুরু, অর্থাৎ ফরীশী ও শাস্ত্রীয় পুরোহিতগণ ষড়যন্ত্র
করে প্রভু যীশু খ্রীষ্টকে রোমীয় শাসক দ্বারা হত্যা করিয়েছিলেন, কারণ সেই সময়ে ইস্রায়েল
রোমান শাসনের অধীনে ছিল।
এখন প্রশ্ন এটাই,
কেন যীশুকে ষড়যন্ত্র করে
হত্যা করা হয়েছিল ?
আসুন আমরা এই প্রশ্নের
উত্তর বাইবেল থেকে বিশ্লেষণ করি -
প্রভু যীশু, যিনি মানবরূপে ঈশ্বর ছিলেন, তিনি
এই পৃথিবীতে এসে তাঁর উপদেশ ও আশ্চর্য কাজগুলির দ্বারা মানুষদের নিজের প্রতি আকর্ষণ
করেছিলেন। তিনি অনন্ত জীবনের প্রচার করতেন, আর সেই জন্য অনেকেই তা লাভ করার জন্য তাঁকে
অনুসরণ করতে শুরু করেছিল।
যোহন ৬ অধ্যায় ৪৭
পদে প্রভু যীশু বলেছেন –
সত্য, সত্য, আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, যে বিশ্বাস করে, সে অনন্ত জীবন পাইয়াছে।
যীশু তাঁর প্রচারের মধ্য দিয়ে নিজেকে খ্রীষ্ট বা
মসীহ হিসেবে দাবী করতেন এবং ঈশ্বরকে নিজের পিতা বলে নিজেকে ঈশ্বরের সমান করতেন।
যোহন ৫ অধ্যায় ১৮
পদে লেখা আছে –
এই কারণ যিহূদিগণ তাঁহাকে বধ করিতে আরও চেষ্টা পাইল; কেননা তিনি কেবল বিশ্রামবার লঙ্ঘন করিতেন তাহা নয়, কিন্তু আবার ঈশ্বরকে নিজ পিতা বলিতেন, আপনাকে ঈশ্বরের সমান করিতেন।
যীশু বিশ্রামবারে মানুষদের
সুস্থ করতেন, যা ফরীশী ও শাস্ত্রীয় পুরোহিতদের কাছে ঈশ্বর নিন্দা হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল,
কিন্তু যীশু যে বিশ্রামবারের কর্তা ছিলেন, সেটি তারা মেনে নেননি।
মথি ১২ অধ্যায় ৮
পদে প্রভু যীশু বলেছেন –
কেননা মনুষ্যপুত্র বিশ্রামবারের কর্ত্তা।
এছাড়াও তিনি ফরীশী ও শাস্ত্রীয়
পুরোহিতদের ভণ্ডতাগুলি মানুষের কাছে প্রকাশ করতেন। মথি ২৩ অধ্যায় ২ থেকে ৩২ পদ
যদি আমরা অধ্যায়ন করি, তাহলে এই বিষয়টি স্পষ্ট হবে, কারণ সেখানে প্রভু যীশু বলেছেন
–
2 অধ্যাপক ও ফরীশীরা মোশির আসনে বসে। 3 অতএব তাহারা তোমাদিগকে যাহা কিছু বলে, তাহা পালন করিও, মানিও, কিন্তু তাহাদের কর্ম্মের মত কর্ম্ম
করিও না; কেননা
তাহারা বলে, কিন্তু
করে না। 4 তাহারা
ভারী দুর্ব্বহ বোঝা বাঁধিয়া লোকদের কাঁধে চাপাইয়া দেয়, কিন্তু আপনারা অঙ্গুলি দিয়াও তাহা
সরাইতে চাহে না। 5 তাহারা
লোককে দেখাইবার জন্যই তাহাদের সমস্ত কর্ম্ম করে; কেননা তাহারা আপনাদের কবচ প্রশস্ত করে, এবং বস্ত্রের থোপ বড় করে, 6 আর ভোজে প্রধান স্থান, সমাজগৃহে প্রধান প্রধান আসন, 7 হাটে বাজারে মঙ্গলবাদ, এবং লোকের কাছে রব্বি [গুরু] বলিয়া
সম্ভাষণ, এ সকল ভাল
বাসে। 8 কিন্তু তোমরা
‘রব্বি’ বলিয়া সম্ভাষিত হইও না, কারণ তোমাদের গুরু এক জন, এবং তোমরা সকলে ভ্রাতা। 9 আর পৃথিবীতে কাহাকেও ‘পিতা’ বলিয়া
সম্বোধন করিও না, কারণ
তোমাদের পিতা এক জন, তিনি সেই
স্বর্গীয়। 10 তোমরা
‘আচার্য্য’ বলিয়া সম্ভাষিত হইও না, কারণ তোমাদের আচার্য্য এক জন, তিনি খ্রীষ্ট। 11 কিন্তু তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি
শ্রেষ্ঠ, সে
তোমাদের পরিচারক হইবে। 12 আর যে কেহ
আপনাকে উচ্চ করে, তাহাকে নত
করা যাইবে; আর যে কেহ
আপনাকে নত করে, তাহাকে
উচ্চ করা যাইবে।
13 কিন্তু হা অধ্যাপক ও ফরীশীগণ, কপটীরা, ধিক্, তোমাদিগকে! কারণ তোমরা মনুষ্যদের সম্মুখে
স্বর্গরাজ্য রুদ্ধ করিয়া থাক; 14 আপনারাও তাহাতে প্রবেশ কর না, এবং যাহারা প্রবেশ করিতে আইসে, তাহাদিগকে প্রবেশ করিতে দেও না।
15 হা অধ্যাপক ও ফরীশীগণ, কপটীরা, ধিক্
তোমাদিগকে! কারণ এক জনকে যিহূদী-ধর্ম্মাবলম্বী করিবার জন্য তোমরা সমুদ্রে ও স্থলে
পরিভ্রমণ করিয়া থাক; আর যখন
কেহ হয়, তখন
তাহাকে তোমাদের অপেক্ষা দ্বিগুণ নারকী করিয়া তুল।
16 হা অন্ধ পথ-দর্শকেরা, ধিক্ তোমাদিগকে! তোমরা বলিয়া থাক, কেহ মন্দিরের দিব্য করিলে তাহা কিছুই
নয়, কিন্তু যে
কেহ মন্দিরস্থ স্বর্ণের দিব্য করিল, সে আবদ্ধ হইল। 17 মূঢ়েরা ও অন্ধেরা, বল দেখি, কোন্টী শ্রেষ্ঠ? স্বর্ণ, না সেই মন্দির, যাহা স্বর্ণকে পবিত্র করিয়াছে? 18 আরও বলিয়া থাক, কেহ যজ্ঞবেদির দিব্য করিলে তাহা কিছুই
নয়, কিন্তু যে
কেহ তাহার উপরিস্থ উপহারের দিব্য করিল, সে আবদ্ধ হইল। 19 হা অন্ধেরা, বল দেখি, কোন্টী শ্রেষ্ঠ? উপহার, না সেই যজ্ঞবেদি, যাহা উপহারকে পবিত্র করে? 20 যে ব্যক্তি যজ্ঞবেদির দিব্য করে, সে ত বেদির ও তাহার উপরিস্থ সমস্তেরই
দিব্য করে। 21 আর যে
মন্দিরের দিব্য করে, সে
মন্দিরের, এবং যিনি
তথায় বাস করেন, তাঁহারও
দিব্য করে। 22 আর যে
স্বর্গের দিব্য করে, সে
ঈশ্বরের সিংহাসনের, এবং যিনি
তাহাতে উপবিষ্ট, তাঁহারও
দিব্য করে।
23 হা অধ্যাপক ও ফরীশীগণ, কপটীরা, ধিক্
তোমাদিগকে! কারণ তোমরা পোদিনা, মৌরি ও জিরার দশমাংশ দিয়া থাক; আর ব্যবস্থার মধ্যে গুরুতর
বিষয়—ন্যায়বিচার, দয়া ও
বিশ্বাস—পরিত্যাগ করিয়াছ; কিন্তু এ
সকল পালন করা, এবং ঐ
সকলও পরিত্যাগ না করা, তোমাদের
উচিত ছিল। 24 অন্ধ
পথ-দর্শকেরা, তোমরা মশা
ছাঁকিয়া ফেল, কিন্তু উট
গিলিয়া থাক।
25 হা অধ্যাপক ও ফরীশীগণ, কপটীরা, ধিক্
তোমাদিগকে! কারণ তোমরা পানপাত্র ও ভোজনপাত্র বাহিরে পরিষ্কার করিয়া থাক, কিন্তু সেগুলির ভিতরে দৌরাত্ম্য ও
অন্যায় ভরা। 26 অন্ধ
ফরীশী, অগ্রে
পানপাত্র ও ভোজনপাত্র ভিতরে পরিষ্কার কর, যেন তাহা বাহিরেও পরিষ্কার হয়।
27 হা অধ্যাপক ও ফরীশীগণ, কপটীরা, ধিক্
তোমাদিগকে! কারণ তোমরা চূণকাম করা কবরের তুল্য; তাহা বাহিরে দেখিতে সুন্দর বটে, কিন্তু ভিতরে মরা মানুষের অস্থি ও
সর্ব্বপ্রকার অশুচিতা ভরা। 28 তদ্রূপ
তোমরাও বাহিরে লোকদের কাছে ধার্ম্মিক বলিয়া দেখাইয়া থাক, কিন্তু ভিতরে তোমরা কাপট্য ও অধর্ম্মে
পরিপূর্ণ।
29 হা অধ্যাপক ও ফরীশীগণ, কপটীরা, ধিক্
তোমাদিগকে! কারণ তোমরা ভাববাদিগণের কবর গাঁথিয়া থাক, এবং ধার্ম্মিকগণের সমাধি-স্তম্ভ শোভিত
করিয়া থাক, আর বলিয়া
থাক, 30 আমরা যদি
আমাদের পিতৃপুরুষদের সময়ে থাকিতাম, তবে ভাববাদিগণের রক্তপাতে তাঁহাদের
সহভাগী হইতাম না। 31 ইহাতে
তোমরা আপনাদের বিষয়ে এই সাক্ষ্য দিতেছ যে, যাহারা ভাববাদিগণকে বধ করিয়াছিল, তোমরা তাহাদেরই সন্তান। 32 তোমরাও তোমাদের পিতৃপুরুষদের পরিমাণ
পূর্ণ কর।
ফরীশী ও শাস্ত্রীয় পুরোহিতগণ
প্রভু যীশুকে বিশ্বাস করতেন না, তারা যখন দেখলেন যে, তাঁর অনুসারীর সংখ্যা দিন দিন
বৃদ্ধি পেয়েই চলেছে, তখন তারা প্রভু যীশুকে থামানোর জন্য উপায় খুঁজতে শুরু করেন।
(প্রভুকে বন্দি করার ঘটনাটি
জানবার জন্য আমরা মথি ২৬ অধ্যায় ৪৭ থেকে ৫৬ পদ দেখতে পারি)।
ফরীশী ও শাস্ত্রীয় পুরোহিতগণ
একটি মিথ্যে অভিযোগ পীলাতের সামনে তুলে ধরেন, যা লুক ২৩ অধ্যায় ২ পদে আমরা পেয়ে
থাকি, সেখানে লেখা আছে –
আর তাহারা তাঁহার উপরে দোষারোপ করিয়া বলিতে লাগিল, আমরা দেখিতে পাইলাম যে, এ ব্যক্তি আমাদের জাতিকে
বিগড়িয়া দেয়,
কৈসরকে রাজস্ব দিতে বারণ করে, আর বলে যে, আমিই খ্রীষ্ট রাজা।
কিন্তু আমরা যদি সুসমাচারগুলি
অধ্যায়ন করি, তাহলে স্পষ্টভাবেই আমরা জানতে পারব যে, প্রভু যীশু কখনই রোমান সম্রাটকে
রাজস্ব বা কর দিতে বারণ করেননি।
উদাহরণস্বরূপ, মথি
২২ অধ্যায় ১৭ থেকে ২১ পদে বিষয়টি স্পষ্ট হয়, সেখানে লেখা আছে –
17 ভাল, আমাদিগকে
বলুন, আপনার মত
কি কৈসরকে কর দেওয়া বিধেয় কি না?
18 কিন্তু যীশু তাহাদের দুষ্টামি বুঝিয়া কহিলেন, কপটীরা, আমার পরীক্ষা কেন করিতেছ? 19 সেই করের মুদ্রা আমাকে দেখাও। তখন
তাহারা তাঁহার নিকটে একটী দীনার আনিল। 20 তিনি তাহাদিগকে কহিলেন, এই মূর্ত্তি ও এই নাম কাহার? তাহারা বলিল, কৈসরের।
21 তখন তিনি তাহাদিগকে কহিলেন, তবে কৈসরের যাহা যাহা, কৈসরকে দেও, আর ঈশ্বরের যাহা যাহা, ঈশ্বরকে দেও।
ওপরের এই পদগুলি থেকে
বিষয়টি স্পষ্ট যে, প্রভু যীশু কর দিতে কখনও বারণ করেননি, মথি ১৭ অধ্যায় ২৪ থেকে
২৬ পদে আমরা দেখতে পাই, প্রভু যীশু খ্রীষ্ট নিজেও কর দিতেন।
পীলাত যখন ইহুদী ধর্মগুরু
ও শাস্ত্রীয় পুরহিতদের অভিযোগের তদন্ত করেন, তখন এটি প্রমাণিত হয় যে, সেই অভিযোগ মিথ্যে।
তারপর তারা একটি দল গঠন করে যীশুর মৃত্যুর আদেশের দাবী জানায় এবং বারাব্বা নামক একজন
বন্দি, যে দাঙ্গা ও নরহত্যার জন্য কারারুদ্ধ হয়েছিল, তার মুক্তির দাবী করে। কারণ, পর্বের
সময়ে পীলাত একজন বন্দিকে মুক্তি দিতেন।
লুক ২৩ অধ্যায় ২২
থেকে ২৫ পদে লেখা আছে –
22 পরে তিনি তৃতীয় বার তাহাদিগকে কহিলেন, কেন? এ কি অপরাধ করিয়াছে? আমি ইহার প্রাণদণ্ডের যোগ্য কোন দোষই
পাই নাই, অতএব
ইহাকে শাস্তি দিয়া ছাড়িয়া দিব।
23 কিন্তু তাহারা উচ্চ রবে উগ্র ভাবে চাহিতে থাকিল, যেন তাঁহাকে ক্রুশে দেওয়া হয়; আর তাহাদের রব প্রবল হইল। 24 তখন পীলাত তাহাদের যাচ্ঞা অনুসারে
করিতে আজ্ঞা দিলেন; 25 দাঙ্গা ও
নরহত্যা প্রযুক্ত কারাবদ্ধ যে ব্যক্তিকে তাহারা চাহিল, তিনি তাহাকে মুক্ত করিলেন, কিন্তু যীশুকে তাহাদের ইচ্ছার অধীনে
সমর্পণ করিলেন।
সেই সময় একজন মৃত্যুদণ্ড
প্রাপ্ত ব্যক্তিকে ক্রুশে টাঙ্গিয়ে হত্যা করা হত, আর সেই কারণে প্রভু যীশুকেও ক্রুশে
টাঙ্গিয়ে হত্যা করা হয়েছিল।
যীশুকে যেদিন ক্রুশে দেওয়া
হয়েছিল, সেই দিনটি ছিল শুক্রবার, আর সেই জন্যই প্রভুর অনুসারীরা বছরের একটি দিন বিশেষভাবে
তাঁর মৃত্যুকে স্মরণ করেন এবং জগতের কাছে প্রচার করে থাকেন। সাধারনত তারা সারা বছর
প্রভুর মৃত্যুকে প্রচার করলেও, এই গুড ফ্রাইডে নামক দিনটিতে তাদের জন্য প্রচারের বিশেষ
সুযোগ থাকে।
এমন অনেক খ্রীষ্ট বিশ্বাসীরা রয়েছেন, যারা এই
গুড ফ্রাইডের দিনে দুঃখ প্রকাশ করে থাকেন, কারণ প্রভু যীশু আমাদের পাপের জন্য নিজের
প্রাণ উৎসর্গ করেছিলেন।
আবার অন্যদিকে এমন বিশ্বাসীরাও
রয়েছেন, যারা এই দিনটিতে আনন্দিত হন, কারণ তারা বিশ্বাস করেন, প্রভু যীশুর মৃত্যুর
কারণেই আমরা পাপের ক্ষমা ও অনন্ত জীবন লাভ করেছি।
তাহলে প্রশ্ন এটাই যে, এই দিনটিতে আমাদের আনন্দিত
হওয়া উচিত নাকি দুঃখ প্রকাশ করা উচিত ?
তো, এই প্রশ্নের উত্তর
জানার জন্য আমাদের সম্পূর্ণ বাইবেলকে যাচাই করতে হবে।
ঈশ্বর যখন সমস্ত কিছু
সৃষ্টি করেছিলেন, তখন তাঁর সৃষ্টির সমস্ত কিছুই ভালো ছিল। তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি
হল মানুষ, আর এই মানুষের আজ্ঞা লঙ্ঘনের কারণেই সমগ্র সৃষ্টিতে পাপের আগমন ঘটে; আর সেই
পাপ আজ প্রত্যেকটি মানুষের মধ্যেই বিরাজমান।
মানুষ চাইলেও নিজের ইচ্ছেতে
পাপের কবল থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারে না। আর সেই জন্যই ঈশ্বর মানুষের পরিত্রাণের
জন্য একটি পথ তৈরী করেছেন, আর সেই পথ হল – প্রভু যীশু খ্রীষ্টের ক্রুশীয় বলিদান। তাঁর
রক্তের বিনিময়েই আমরা পাপমোচন প্রাপ্ত হই।
ইব্রীয় ৯ অধ্যায়
২২ পদে লেখা আছে –
আর
ব্যবস্থানুসারে প্রায় সকলই রক্তে শুচিকৃত হয়, এবং
রক্তসেচন ব্যতিরেকে পাপমোচন হয় না।
এছাড়াও ইব্রীয় ৯ অধ্যায়
২৫ থেকে ২৮ পদে লেখা আছে –
25 আর মহাযাজক যেমন বৎসর সৎসর পরের রক্ত লইয়া পবিত্র স্থানে প্রবেশ
করেন, তদ্রূপ খ্রীষ্ট যে অনেক বার আপনাকে উৎসর্গ করিবেন, তাহাও নয়; 26 কেননা তাহা হইলে জগতের পত্তনাবধি অনেক বার তাঁহাকে মৃত্যু ভোগ
করিতে হইত। কিন্তু বাস্তবিক তিনি এক বার, যুগপর্য্যায়ের পরিণামে, আত্মযজ্ঞ দ্বারা পাপ নাশ করিবার
নিমিত্ত, প্রকাশিত হইয়াছেন। 27 আর যেমন মনুষ্যের নিমিত্ত এক বার মৃত্যু, তৎপরে বিচার নিরূপিত আছে, 28 তেমনি খ্রীষ্টও ‘অনেকের পাপভার তুলিয়া লইবার’ নিমিত্ত এক বার উৎসৃষ্ট হইয়াছেন; তিনি দ্বিতীয় বার, বিনা পাপে, তাহাদিগকে দর্শন দিবেন, যাহারা পরিত্রাণের নিমিত্ত তাঁহার
অপেক্ষা করে।
মার্ক ১০ অধ্যায়
৪৫ পদে প্রভু যীশু নিজের মুখে
বলেছেন –
কারণ
বাস্তবিক মনুষ্যপুত্রও পরিচর্য্যা পাইতে আসেন নাই, কিন্তু
পরিচর্য্যা করিতে এবং অনেকের পরিবর্ত্তে আপন প্রাণ মুক্তির মূল্যরূপে দিতে
আসিয়াছেন।
প্রভু যীশুর জন্মের উদ্দেশ্যই
ছিল আমাদের পাপের জন্য নিজের প্রাণ উৎসর্গ করা, যাতে যে কেউ তাঁর ওপর বিশ্বাস করে,
সে পাপের কারণে বিনষ্ট না হয়ে অনন্ত জীবনে প্রবেশ করতে পারে।
প্রভু যীশুর জন্মের ৭০০
বছর আগেই যিশাইয় ভাববাদী দ্বারা তাঁর মৃত্যু সম্পর্কে ভবিষ্যৎবাণী করা হয়েছিল।
যিশাইয় ৫৩ অধ্যায়
৫ পদে উল্লিখিত আছে –
কিন্তু তিনি আমাদের অধর্ম্মের নিমিত্ত
বিদ্ধ,
আমাদের অপরাধের নিমিত্ত চূর্ণ হইলেন;
আমাদের শান্তিজনক শাস্তি তাঁহার উপরে
বর্ত্তিল,
এবং তাঁহার ক্ষত সকল দ্বারা আমাদের
আরোগ্য হইল।
আমরা তাঁর ক্ষত সকল দ্বারা
পাপ নামক ব্যাধি হতে আরোগ্য লাভ করেছি।
সেই পুন্য শুক্রবারে ঈশ্বরের
সেই পূর্বপরিকল্পিত মহান উদ্দেশ্য পূরণ হয়েছিল, সেই জন্য যোহন ১৯ অধ্যায় ৩০ পদে
লেখা আছে –
সিরকা
গ্রহণ করিবার পর যীশু কহিলেন, ‘সমাপ্ত হইল’; পরে মস্তক নত করিয়া আত্মা সমর্পণ করিলেন।
আর এই কারণেই এই দিনটিকে
গুড ফ্রাইডে বা পুন্য শুক্রবার বলা হয়।
আজ আমাদের দুঃখের পাশাপাশি আনন্দ করারও বিষয়
রয়েছে, কারণ প্রভু যীশুর বলিদানের দ্বারা পিতা ঈশ্বরের মহান উদ্দেশ্য সফল হয়েছে।
এছাড়াও আমরা আনন্দ করতে
পারি, কারণ আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্ট কেবল আমাদের জন্য প্রাণই দেননি, বরং মৃত্যুকে
পরাজিত করে তৃতীয় দিনে পুনরুত্থিতও হয়েছেন।
যোহন ১০ অধ্যায় ১৭
এবং ১৮ পদে প্রভু যীশু বলেছেন –
17 পিতা আমাকে এই জন্য প্রেম করেন, কারণ আমি আপন প্রাণ সমর্পণ করি, যেন পুনরায় তাহা গ্রহণ করি। 18 কেহ আমা হইতে তাহা হরণ করে না, বরং আমি আপনা হইতেই তাহা সমর্পণ করি।
তাহা সমর্পণ করিতে আমার ক্ষমতা আছে; এবং পুনরায় তাহা গ্রহণ করিতেও আমার
ক্ষমতা আছে; এই আদেশ আমি আপন পিতা হইতে পাইয়াছি।
প্রভু যীশু আমাদেরকে ভরসা
দিয়েছেন যে, আমরা যদি তাঁর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করি, তবে আমরাও শেষ দিনে পুনরুত্থিত
হবো, কারণ তিনি এখন আর মৃত নন বরং তিনি পুনরুত্থিত ও জীবিত।
অতএব, আমরা আনন্দ করতে
পারি, কারণ আমাদের প্রভু জীবিত।
তাই, আসুন আমরা সকলে মিলে
এই সুসংবাদ জগতের মানুষদের কাছে প্রচার করি যে, প্রভু যীশু খ্রীষ্ট আমাদের পাপের জন্য
প্রাণ দিয়েছেন, কবরপ্রাপ্ত হয়েছেন এবং মৃত্যুকে জয় করে পুনরুত্থিত হয়েছেন।
আমেন।
Tags:-
Christian Articles, বাংলা খ্রীষ্টীয় নিবন্ধ, bsbbca, bibleshikshabhaskar, BSB Ministry, Bengali Christian Blog, Bangla Gospel, Bengali Gospel, Preaching in Bengali Language, Bible Based Articles, বাংলা প্রচার, বাংলা যীশুর প্রচার, Bangla Christiyo Christio Khristiyo Khristio Prochar, bsbbca blog, BSB Gospel, Gospel Articles, Bangla Nibondho, Gospel Online, Online Gospel, বাইবেল প্রচার, বাইবেলের বাক্য, BSB Evangelical Team, Blogger, Jesus Christ, যীশু খ্রীষ্ট, Good Friday Bengali Article, Good Friday, Easter,
0 Comments