যীশু খ্রীষ্ট কি নিজেকে ঈশ্বর বলে দাবী করতেন ? | BSB Bengali Christian Articles
আমরা এটা জানি যে, পুরো
বাইবেল প্রভু যীশু খ্রীষ্টের ঈশ্বরত্বের দাবী করে, কিন্তু সেটি বোঝার জন্য আমাদের আত্মীক
চক্ষু উন্মুক্ত করার প্রয়োজন।
অনেকেই বলে থাকেন, এই
সমস্ত কিছু বাদ দাও, আমাদের এটা বলো যে, যীশু খ্রীষ্ট কি কখনও নিজের মুখে দাবী করেছেন
যে, তিনি ঈশ্বর ?
এর উত্তর হবে – হ্যাঁ।
কিন্তু এই বিষয়টিকে বিশ্লেষণ
করার আগে আমরা সেই সমস্ত বাক্যগুলি প্রথমে তুলে ধরব, যে সমস্ত বাক্যগুলি প্রভু যীশুর
ঈশ্বরত্বের দাবী করে।
যোহন ১ অধ্যায় ১
পদঃ-
আদিতে
বাক্য ছিলেন, এবং বাক্য ঈশ্বরের কাছে ছিলেন, এবং
বাক্য ঈশ্বর ছিলেন।
যোহন ১ অধ্যায় ১৪
পদঃ-
আর সেই বাক্য মাংসে মূর্ত্তিমান হইলেন, এবং আমাদের মধ্যে প্রবাস করিলেন, আর আমরা তাঁহার মহিমা দেখিলাম, যেমন পিতা হইতে আগত একজাতের মহিমা; তিনি অনুগ্রহে ও সত্যে পূর্ণ।
এই বাক্যের অর্থ হল, বাক্য
(যিনি ঈশ্বর ছিলেন, তিনি) মানুষ হয়ে অর্থাৎ যীশু খ্রীষ্ট হয়ে এই জগতে এসেছিলেন।
যীশু যখন ৪০ দিনের উপবাস রেখেছিলেন, তখন শয়তান
প্রভু যীশুর পরীক্ষা নেওয়ার জন্য তাকে প্রলোভন দেখিয়েছিল, যার বর্ণনা আমরা পাই নিম্ন
লিখিত পদে –
মথি ৪ অধ্যায় ৯ থেকে
১০ পদঃ-
9 আর তাঁহাকে কহিল, তুমি যদি ভূমিষ্ঠ হইয়া আমাকে প্রণাম কর, এই সমস্তই আমি তোমাকে দিব।
10 তখন যীশু তাহাকে কহিলেন, দূর হও, শয়তান; কেননা লেখা আছে, “তোমার ঈশ্বর প্রভুকেই প্রণাম করিবে, কেবল তাঁহারই আরাধনা করিবে।”
যোহন ৫ অধ্যায় ১৮
পদে লেখা আছে –
এই কারণ
যিহূদিগণ তাঁহাকে বধ করিতে আরও চেষ্টা পাইল; কেননা তিনি কেবল বিশ্রামবার
লঙ্ঘন করিতেন তাহা নয়, কিন্তু আবার ঈশ্বরকে নিজ পিতা
বলিতেন, আপনাকে ঈশ্বরের সমান করিতেন।
ঈশ্বরের সমান করার অর্থ
হল – নিজেকে ঈশ্বর বলে দাবী করা। ইহুদীরা জানত যে, ঈশ্বরের পুত্র অর্থাৎ ঈশ্বর, তাই
যীশুকে তারা মেরে ফেলার চেষ্টা করতে শুরু করেছিল।
এই ঘটনার পর আমরা বাইবেলে দেখতে পাই যে,
যীশু একবার একজন জন্মান্ধকে সুস্থ করেছিলেন, কিন্তু সেই ব্যক্তিটি তখন যীশুকে দেখতে
পায়নি, কিন্তু পরে যখন সেই ব্যক্তিটি তার আরোগ্যদাতার প্রশংসা করতে শুরু করল, তখন ফরীশীগণ
তাকে অপমান করে উপাসনা গৃহ (Synagogue) থেকে বের করে দিয়েছিল।
যোহন ৯ অধ্যায় ৩৫
থেকে ৩৮ পদে লেখা আছে –
35 যীশু শুনিলেন যে, তাহারা তাহাকে বাহির করিয়া দিয়াছে; আর তিনি তাহার দেখা পাইয়া বলিলেন, তুমি কি ঈশ্বরের পুত্রে বিশ্বাস করিতেছ?
36 সে উত্তর করিয়া কহিল, প্রভু, তিনি কে? আমি যেন তাঁহাতে বিশ্বাস করি।
37 যীশু তাহাকে কহিলেন, তুমি তাঁহাকে দেখিয়াছ; আর তিনিই তোমার সঙ্গে কথা কহিতেছেন।
38 সে কহিল, বিশ্বাস করিতেছি, প্রভু; আর সে তাঁহাকে প্রণাম করিল।
ওপরের ৩৮ পদে আমরা দেখতে
পাই, সেই জন্মান্ধ লোকটি, যাকে প্রভু যীশু সুস্থ করেছিলেন, সে যীশুকে প্রণাম করেছিল,
আর যীশু তার প্রণাম স্বীকার করেছিলেন, তিনি সেই ব্যক্তিকে বারণ করেননি। আমরা জানি যে,
মথি ৪ অধ্যায় ১০ পদে প্রভু যীশু কেবলমাত্র ঈশ্বরকেই প্রণাম করতে বলেছেন, আর ওপরের ৩৮
পদে আমরা দেখতে পাই, প্রভু যীশু নিজে সেই ব্যক্তির প্রণাম স্বীকার করেছেন, অতএব এ ঘটনা
থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, যীশু আসলে কে ছিলেন।
যোহন ১০ অধ্যায় ৩১
থেকে ৩৩ পদে আমরা একটি ঘটনার
উল্লেখ পাই, সেখানে লেখা আছে –
31 যিহূদীরা আবার তাঁহাকে মারিবার জন্য
পাথর তুলিল। 32 যীশু
তাহাদিগকে উত্তর করিলেন, পিতা হইতে
তোমাদিগকে অনেক উত্তম কার্য্য দেখাইয়াছি, তাহার কোন্ কার্য্য প্রযুক্ত আমাকে
পাথর মার?
33 যিহূদীরা তাঁহাকে এই উত্তর দিল, উত্তম কার্য্যের জন্য তোমাকে পাথর
মারি না, কিন্তু
ঈশ্বর-নিন্দার জন্য, কারণ তুমি
মানুষ হইয়া আপনাকে ঈশ্বর করিয়া তুলিতেছ, এই জন্য।
ওপরের ৩৩ পদে আমরা দেখতে
পাই যে, ইহুদীরা যীশুকে পাথর মারতে গিয়েছিল, কারণ যীশু মানুষ হয়েও ঈশ্বরের সমান হিসেবে
নিজেকে তুলে ধরতেন। ইহুদীদের হিসেব অনুযায়ী যীশুর দাবী তাদের কাছে ঈশ্বর-নিন্দা ছিল,
যেমনটা লেবীয় পুস্তক ২৪ অধ্যায় ১৬ পদে লেখা আছে, তাই তারা যীশুকে পাথর মারতে অগ্রসর
হয়েছিল।
যীশুর পুনরুত্থানের পর তিনি যখন তাঁর শিষ্যদের
দেখা দিয়েছিলেন, তখন ১১ জন শিষ্যদের মধ্যে ১ জন, যার নাম থোমা, সে সেখানে উপস্থিত ছিল
না।
যোহন ২০ অধ্যায় ২৫
থেকে ২৮ পদে লেখা আছে -
25 অতএব অন্য শিষ্যেরা তাঁহাকে কহিলেন, আমরা প্রভুকে দেখিয়াছি। কিন্তু তিনি
তাঁহাদিগকে বলিলেন, আমি যদি
তাঁহার দুই হাতে প্রেকের চিহ্ন না দেখি, ও সেই প্রেকের স্থানে আমার অঙ্গুলি না
দিই, এবং
তাঁহার কুক্ষিদেশ মধ্যে আমার হাত না দিই, তবে কোন মতে বিশ্বাস করিব না।
26 আট দিন পরে তাঁহার শিষ্যগণ পুনরায়
গৃহ-মধ্যে ছিলেন, এবং থোমা
তাঁহাদের সঙ্গে ছিলেন। দ্বার সকল রুদ্ধ ছিল, এমন সময়ে যীশু আসিলেন, মধ্যস্থানে দাঁড়াইলেন, আর কহিলেন, তোমাদের শান্তি হউক। 27 পরে তিনি থোমাকে কহিলেন, এ দিকে তোমার অঙ্গুলি বাড়াইয়া দেও, আমার হাত দুখানি দেখ, আর তোমার হাত বাড়াইয়া দেও, আমার কুক্ষিদেশ মধ্যে দেও; এবং অবিশ্বাসী হইও না, বিশ্বাসী হও।
28 থোমা উত্তর করিয়া তাঁহাকে কহিলেন, প্রভু আমার, ঈশ্বর আমার!
ওপরের ২৮ পদের ভিত্তিতে
২৯ পদে লেখা আছে –
যীশু
তাঁহাকে বলিলেন,
তুমি আমাকে দেখিয়াছ বলিয়া বিশ্বাস
করিয়াছ? ধন্য তাহারা, যাহারা না দেখিয়া বিশ্বাস করিল।
তো থোমা যখন বলেছিলেন
– প্রভু আমার, ঈশ্বর আমার!
তখন প্রভু যীশু থোমার
এই সম্বোধনের প্রতিরোধ না করে তার এই সম্বোধন স্বীকার করেছিলেন। যীশু থোমাকে কখনই বলেননি
যে, আমি ঈশ্বর নই, আমাকে ঈশ্বর কেন বলছ!
ফিলিপীয় ২ অধ্যায়
৬ থেকে ৭ পদে লেখা আছে –
6 ঈশ্বরের স্বরূপবিশিষ্ট থাকিতে তিনি
ঈশ্বরের সহিত সমান থাকা ধরিয়া লইবার বিষয় জ্ঞান করিলেন না,
7 কিন্তু আপনাকে শূন্য করিলেন,
দাসের রূপ ধারণ করিলেন,
মনুষ্যদের সাদৃশ্যে জন্মিলেন;
ওপরের পদ দুটি আমাদের স্পষ্ট করেই বলছে যে, যীশু মানুষ রূপে
ঈশ্বর ছিলেন। তিনি নিজের দৈবিক সত্তা থেকে নিজেকে শূন্য করে একজন সাধারণ মানুষের মতোই
জন্ম নিয়েছিলেন।
বাইবেলের পুরাতন নিয়মের অনেক জায়গাতেই
আমরা দেখতে পাই যে, ঈশ্বর মেঘের সহিত উপস্থিত হতেন।
যাত্রাপুস্তক ১৩
অধ্যায় ২১ পদে লেখা
আছে -
আর
সদাপ্রভু দিবাতে পথ দেখাইবার জন্য মেঘস্তম্ভে থাকিয়া, এবং রাত্রিতে দীপ্তি দিবার জন্য অগ্নিস্তম্ভে থাকিয়া তাহাদের অগ্রে
অগ্রে গমন করিতেন,
যেন তাহারা দিবারাত্র গমন করিতে পারে।
১ রাজাবলি ৮ অধ্যায়
১০ থেকে ১১ পদে লেখা
আছে –
10 আর পবিত্র স্থানের মধ্য হইতে যাজকদের বাহির হইবার সময়ে সদাপ্রভুর
গৃহ মেঘে এমন পরিপূর্ণ হইল যে, 11 মেঘ প্রযুক্ত যাজকেরা পরিচর্য্যা করিবার জন্য দাঁড়াইতে পারিল না; কেননা সদাপ্রভুর গৃহ সদাপ্রভুর
প্রতাপে পরিপূর্ণ হইয়াছিল।
যিহিষ্কেল ১ অধ্যায় ৪ পদে লেখা আছে -
আমি দৃষ্টি
করিলাম, আর দেখ, উত্তরদিক্ হইতে ঘূর্ণ্যবায়ু, বৃহৎ মেঘ ও জাজ্বল্যমান অগ্নি আসিল, এবং
তাহার চারিদিকে তেজ ও তাহার মধ্যস্থানে অগ্নির মধ্যবর্ত্তী প্রতপ্ত ধাতুর ন্যায়
প্রভা ছিল।
এছাড়াও বাইবেলের পুরাতন
নিয়মে এমন অনেক পদই রয়েছে, যেখানে আমরা স্পষ্টই দেখতে পাই যে, ঈশ্বর মেঘের সহিত উপস্থিত
হতেন। আর সেই পুরাতন নিয়মেই দানিয়েল ৭ অধ্যায় ১৩ পদে যীশুর যীশুর বিষয়ে
এমন ভবিষ্যৎবাণী রয়েছে, সেখানে লেখা আছ –
আমি
রাত্রিকালীন দর্শনে দৃষ্টিপাত করিলাম আর দেখ, আকাশের মেঘ সহকারে
মনুষ্য-পুত্রের ন্যায় এক পুরুষ আসিলেন, তিনি সেই অনেক দিনের বৃদ্ধের
নিকটে উপস্থিত হইলেন, তাঁহার সম্মুখে আনীত হইলেন।
আমরা এর আগের নিবন্ধটিতে
আলোচনা করেছি যে, ‘মনুষ্যপুত্র’ কথার অর্থ কি ?
সেই বিষয়টির সাথে ওপরের
পদটি জড়িত।
ঈশ্বর মেঘ সহকারে উপস্থিত
হতেন, কিন্তু ওপরের পদটিতে দানিয়েল স্বপ্নে দেখেছিলেন, যীশু মেঘ সহকারে এলেন, অর্থাৎ
তিনি ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন যে, মনুষ্যপুত্র অর্থাৎ যীশু মেঘ সহকারে আসতে চলেছেন।
বাইবেলের পুরাতন নিয়ম অনুযায়ী আমরা দেখতে
পাই, ঈশ্বর দণ্ডাজ্ঞা দেওয়ার জন্য অর্থাৎ বিচারের জন্য মেঘ সহকারে আসেন।
যিশাইয় ১৯ অধ্যায়
১ থেকে ২ পদে লেখা আছে –
দেখ, সদাপ্রভু দ্রুতগামী মেঘে আরোহণ করিয়া মিসরে গমন করিতেছেন; মিসরের প্রতিমাগণ তাঁহার সাক্ষাতে
কাঁপিবে, ও মিসরের হৃদয় তাহার অন্তরে দ্রব হইবে। আর আমি মিস্রীয়দিগকে
মিস্রীয়দের বিরুদ্ধে উত্তেজিত করিব; তাহারা প্রত্যেকে আপন আপন ভ্রাতার ও
প্রত্যেকে আপন আপন বন্ধুর সহিত, 2নগর নগরের সহিত, ও রাজ্য রাজ্যের সহিত সংগ্রাম করিবে।
আর বাইবেলের নতুন নিয়মে
আমরা দেখতে পাই যে, যীশুও মেঘ সহকারে আসতে চলেছেন।
মথি ২৬ অধ্যায় ৬২
থেকে ৬৪ পদের একটি ঘটনার বর্ণনায়
আমরা দেখতে পাই, যীশু মেঘরথে বা মেঘ সহকারে আসার দাবী জানিয়েছেন, লেখা আছে –
62 তখন মহাযাজক উঠিয়া দাঁড়াইয়া তাঁহাকে
কহিলেন, তুমি কি
কিছুই উত্তর দিবে না? তোমার
বিরুদ্ধে ইহারা কি সাক্ষ্য দিতেছে? 63 কিন্তু যীশু নীরব রহিলেন। মহাযাজক
তাঁহাকে কহিলেন, আমি
তোমাকে জীবন্ত ঈশ্বরের নামে দিব্য দিতেছি, আমাদিগকে বল দেখি, তুমি কি সেই খ্রীষ্ট, ঈশ্বরের পুত্র?
64 যীশু উত্তর করিলেন, তুমিই বলিলে; আরও আমি তোমাদিগকে কহিতেছি, এখন অবধি তোমরা মনুষ্যপুত্রকে
পরাক্রমের দক্ষিণ পার্শ্বে বসিয়া থাকিতে এবং আকাশের মেঘরথে আসিতে দেখিবে।
জগতের বিচারের জন্য যীশুর যখন দ্বিতীয় আগমন ঘটবে, তখন তিনি মেঘ সহকারেই আসবেন।
ওপরের ৬৪ পদটির সাথে প্রকাশিত বাক্য ১ অধ্যায় ৭ পদটিও সম্পর্কযুক্ত,
সেখানে লেখা আছে –
দেখ, তিনি “মেঘ সহকারে আসিতেছেন,” আর প্রত্যেক চক্ষু তাঁহাকে দেখিবে, এবং “যাহারা তাঁহাকে বিদ্ধ করিয়াছিল, তাহারাও দেখিবে;” আর পৃথিবীর “সমস্ত বংশ তাঁহার জন্য
বিলাপ” করিবে। হাঁ, আমেন।
তো এই সমস্ত পদগুলির ওপর ভিত্তি করে এটা স্পষ্ট
হয় যে, যীশু হলেন ঈশ্বর, যার বিষয়ে পুরাতন নিয়মও সাক্ষ্য দেয়।
অবিশ্বাসীদের কাছে বাইবেলের এই সমস্ত পদগুলিও
যথেষ্ট নয়, তাদের মধ্যে অনেকেই এই প্রশ্নটি অবশ্যই করবে,
যীশু কি নিজের মুখে কখনও
নিজেকে ঈশ্বর বলে দাবী করেছেন ?
যীশু যদি ঈশ্বরই হন, তাহলে
তিনি তা প্রকাশ করেননি কেন ?
তো আসুন আমরা এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর
বাইবেল থেকে দেখি।
যীশু অবশ্যই নিজের মুখে
বলেছেন যে তিনি ঈশ্বর, আর সেটিকে বোঝার জন্য আমাদের ইহুদী সংস্কৃতি অনুযায়ী বাইবেলের
অধ্যায়ন করতে হবে, আমাদের বিচার-বুদ্ধি অনুযায়ী নয়।
একবার যখন কিছু অবিশ্বাসী
ইহুদীগণ যীশুকে দোষ দিচ্ছিল, এবং তাঁর সাথে তর্ক-বিতর্ক করছিল, তখন যোহন ৮ অধ্যায়
৫৬ এবং ৫৮ পদে যীশু তাদের বলেছিলেন –
56 তোমাদের পিতৃপুরুষ অব্রাহাম আমার দিন
দেখিবার আশায় উল্লাসিত হইয়াছিলেন, এবং তিনি তাহা দেখিলেন ও আনন্দ করিলেন।
57 তখন যিহূদীরা তাঁহাকে কহিল, তোমার বয়স এখনও পঞ্চাশ বৎসর হয় নাই, তুমি কি অব্রাহামকে দেখিয়াছ?
58 যীশু তাহাদিগকে কহিলেন, সত্য, সত্য, আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, অব্রাহামের জন্মের পূর্ব্বাবধি আমি
আছি।
আর ৫৯ পদে
লেখা আছে –
তখন
তাহারা তাঁহার উপর ছুড়িয়া মারিবার জন্য পাথর তুলিয়া লইল, যীশু কিন্তু অন্তর্হিত হইলেন, ও ধর্ম্মধাম হইতে বাহিরে গেলেন।
তো ইহুদীরা কেন যীশুকে
মারার জন্য পাথর তুলে নিয়েছিল ?
এর কারণ হল যীশু স্পষ্টভাবেই
নিজেকে যিহোবা ঈশ্বর হিসেবে দাবী করেছিলেন।
এখানে প্রশ্ন আসতে পারে,
কীভাবে আমরা বুঝতে পারি যে যীশু এখানে নিজেকে ঈশ্বর বলে দাবী করেছেন ?
তো এর উত্তর আমরা যাত্রাপুস্তক
৩ অধ্যায় ১৪ পদে পাই, সেখানে লেখা আছে –
ঈশ্বর মোশিকে কহিলেন, “আমি যে আছি সেই আছি”; আরও কহিলেন, ইস্রায়েল-সন্তানদিগকে এইরূপ বলিও, “আছি” তোমাদের নিকটে আমাকে প্রেরণ
করিয়াছেন।
পুরাতন নিয়মে ঈশ্বর নিজের
উদ্দেশ্যে বলেছিলেন – “আমি আছি” বা “I AM”, আর যীশুও নতুন নিয়মে নিজের উদ্দেশ্যে বলেছেন
– “আমি আছি” বা “I AM”। ইহুদীরা জানত যে, “আমি আছি” বা “I AM” নামটি হল ঈশ্বরের, আর
সেই জন্যই তারা যীশুকে মারার জন্য পাথর তুলে নিয়েছিল।
যীশু ইহুদীদের বারবার
দৃষ্টান্তের দ্বারা বোঝাতে চেয়েছিলেন যে, তিনিই ঈশ্বর, যিনি মানব রূপে এই পৃথিবীতে
জন্ম নিয়েছেন।
বাইবেলে ব্যবহৃত “I
AM” শব্দটির অর্থ ‘Self Existing, বা ‘স্ব-বিদ্যমান’, অর্থাৎ তাঁর কোনও সৃষ্টি নেই,
তিনি অনন্ত ও সর্বসময় বিরাজমান, তিনি এমন একজন ঈশ্বর, যার কোনও পরিবর্তন নেই, তিনি
তাঁর প্রতিশ্রুতি সবসময় পূর্ণ করেন, তিনি তাঁর পরিকল্পনা সমস্ত রকম পরিস্থিতিতেই সফল করেন, কেউ তাঁর পরিকল্পনাগুলিকে
থামিয়ে রাখতে পারে না।
যীশুই ত্রিত্ব ঈশ্বরের একজন ব্যক্তি, যার
জন্য তিনি ঈশ্বরের সেই নাম নিজের প্রতি ব্যবহার করেছেন।
প্রকশিত বাক্য ১
অধ্যায় ৮ পদে যীশু যোহনকে বলেছেন
–
আমি আল্ফা
এবং ওমিগা, আদি এবং অন্ত, ইহা প্রভু ঈশ্বর কহিতেছেন, যিনি আছেন ও যিনি ছিলেন, ও যিনি আসিতেছেন, যিনি সর্ব্বশক্তিমান্।
ওপরের পদটিতে আমরা দেখতে
পাচ্ছি যে, যীশু নিজেকে প্রভু ও ঈশ্বর বলে দাবী করেছেন, আর তিনি আসছেন এই জগতের বিচার
করার জন্য, তাঁর কাছেই সমস্ত অধিকার ও কর্তৃত্ব রয়েছে।
এছাড়াও যীশু প্রকাশিত
বাক্য ১ অধ্যায় ১৮ পদে যোহনকে বলেছেন –
আমি
মরিয়াছিলাম, আর দেখ, আমি যুগপর্য্যায়ের যুগে যুগে
জীবন্ত; আর মৃত্যুর ও পাতালের চাবি আমার হস্তে আছে।
যীশু ঈশ্বর, কারণ তিনি
যুগে যুগে জীবিত রয়েছেন, আর মৃত্যু ও পাতালের চাবি তাঁর হাতেই রয়েছে।
অতএব, বিলাপ করুণ ও সত্য
ঈশ্বরের কাছে ফিরে আসুন।
Tags:-
Christian Articles, বাংলা খ্রীষ্টীয় নিবন্ধ, bsbbca, bibleshikshabhaskar, BSB Ministry, Bengali Christian Blog, Bangla Gospel, Bengali Gospel, Preaching in Bengali Language, Bible Based Articles, বাংলা প্রচার, বাংলা যীশুর প্রচার, Bangla Christiyo Christio Khristiyo Khristio Prochar, BSB Gospel, Gospel Articles, Bangla Nibondho, Gospel Online, Online Gospel, বাইবেল প্রচার, বাইবেলের বাক্য, Blogger, Jesus Christ, যীশু খ্রীষ্ট,
0 Comments