Bridge-এর দরকার কখন হয় ? যখন এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাওয়ার জন্য অন্য কোনও উপায় না থাকে, যদি মাঝখানে কোনও গভীর খাত থাকে বা কোনও নদী থাকে, তখন অন্য প্রান্তে পৌঁছানোর জন্য Bridge দরকার হয়।

মনুষ্যজাতি, যারা এই জগৎ সংসারে থাকে, এখানকার জীবন হল একটি প্রান্ত, তাহলে অন্য প্রান্তটি কোথায় ?

একদিন তো এখানকার জীবন শেষ হয়ে যাবে! তখন মনুষ্যজাতি কোথায় যাবে ?

বাইবেল শিক্ষা দেয়, মনুষ্যজাতির অন্য প্রান্তটি হল – মৃত্যুর পরবর্তী জীবন অর্থাৎ অনন্ত জীবন।

মানুষ কি নিজের থেকেই ঈশ্বরের রাজ্যে বা অনন্ত জীবনে প্রবেশ করতে পারে ?

এর উত্তর হবে – কখনই না।

মানুষ কেন নিজের থেকে সেখানে পৌঁছোতে পারবে না ? এর উত্তর হল – মানুষের মধ্যে পাপ বিরাজমান। অনেক ধরনের পাপের উদাহরণ এখানে দেওয়া যেতে পারে – ক্রোধ, স্বার্থ, ঈর্ষা, লোভ, মিথ্যা, ব্যাভিচার, বিভিন্ন প্রকার নেশা, অহংকার, মারপিট, দাঙ্গা, খুন খারাপি, চুরি, ডাকাতি, বেইমানি ইত্যাদি।

আর ঈশ্বর পাপের মধ্যে, পাপের সাথে অবস্থান করতে পারেন না কারণ, ঈশ্বর হলেন পবিত্র, তাঁর মধ্যে কোনও পাপ নেই। এই কারণে স্বর্গে পাপের জন্য কোনও জায়গা নেই। যদি কোনও ব্যক্তি পাপ থেকে পরিত্রাণ না পেয়েই মৃত্যুবরণ করেন, সেই ব্যক্তি কখনই স্বর্গ রাজ্যে বা অনন্ত জীবনে প্রবেশ করতে পারবে না।

যিশাইয় ৫৯ অধ্যায় ১ ও ২ পদ বলে – 1 দেখ, সদাপ্রভুর হস্ত এমন খাট নয় যে, তিনি পরিত্রাণ করিতে পারেন না; তাঁহার কর্ণ এমন ভারী নয় যে, তিনি শুনিতে পান না2 কিন্তু তোমাদের অপরাধ সকল তোমাদের ঈশ্বরের সহিত তোমাদের বিচ্ছেদ জন্মাইয়াছে, তোমাদের পাপ সকল তোমাদের হইতে তাঁহার শ্রীমুখ আচ্ছাদন করিয়াছে, এই জন্য তিনি শুনেন না।

এর অর্থ, যতক্ষণ কোনও মানুষ স্বচ্ছ হৃদয়ে ঈশ্বরের কাছে নিজের পাপের ক্ষমা প্রার্থনা করে প্রভু যীশুকে নিজের একমাত্র উদ্ধারকর্তা হিসেবে স্বীকার না করে, ততক্ষন সে ঈশ্বরের কাছ থেকে দূরে থাকবে।  

কিন্তু প্রভু যীশুকেই কেন ?

কারণ, প্রভু যীশুই আজ থেকে ২০০০ বছর আগে সমস্ত মানবজাতির পাপের দণ্ড ক্রুশের ওপর ভোগ করেছেন, যাতে তিনি সেই সমস্ত মানুষদের তার বলিদানের মাধ্যমে ঈশ্বরের সামনে ধার্মিক প্রতিপন্ন করতে পারেন, যারা তাদের পাপ থেকে মন ফিরিয়ে প্রভু যীশুকে নিজের ত্রাণকর্তা হিসেবে স্বীকার করেছেন।

তো, পাপী মনুষ্যজাতি ও পবিত্র ঈশ্বরের মাঝখানে একটি মাত্র Bridge আছে, সেটি প্রভু যীশু খ্রীষ্ট।

আমরা এটা তো বুঝতে পারলাম যে, যীশুই মানুষের পরিত্রাণের একমাত্র পথ, কিন্তু প্রশ্ন এটাই – যীশু কি শুধুমাত্র আমাদের পাপ থেকে রক্ষা করে স্বর্গে পৌঁছানোর জন্যই Bridge রূপে কাজ করেন ? এর উত্তর হবে – না।

আমাদের জীবনের সব ক্ষেত্রেই প্রভু যীশু Bridge হিসেবে কাজ করেন।

আসুন একটি উদাহরণের মাধ্যমে বোঝার চেষ্টা করি ---

·      “একবার একটি ছোটো শিশু ও তার বাবা একটি বাগানে গিয়েছিল, সেখানে একটি উঁচু গাছ ছিল, সেটার মধ্যে অনেক ফল ধরে ছিল। তো শিশুটি তার বাবাকে বলল – আমি ওই গাছ থেকে একটি ফল খেতে চাই। তখন তার বাবা তাকে বললেন – তুমি তো এখন খুব ছোটো, তাই তুমি ফলের নাগাল পাবে না। কিন্তু শিশুটি জেদ করে বলল – না বাবা, আমি লাফিয়ে ফলটা পাড়তে পারব।

এই বলে শিশুটি গাছের সামনে গিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে ফলটা  

পাড়ার চেষ্টা করতে থাকল, কিন্তু সে ফলটা কিছুতেই পাড়তে পারল না। শেষে নিরাশ হয়ে ও হাঁপিয়ে গিয়ে সে নিচে ঘাসের ওপর বসে পরল।

তখন তার বাবা হাসতে হাসতে সেখানে আসলেন আর বললেন – কোনও সমস্যা নেই, আমি আছি তো! আমি তোমাকে সাহায্য করছি। তখন তিনি তার সন্তানকে তার কাঁধে চাপিয়ে বললেন – এবার হাত বাড়াও আর ফলটা পেড়ে নাও, তখন শিশুটি খুব সহজেই ফলটি পাড়তে সক্ষম হয় এবং শিশুটি ও তার বাবা, দুজনেই ফল খেতে খেতে বাড়ি চলে যায়।”

                                        তো আজ যীশু সব মানুষকে বলেন – তুমি কেন এত লাফাঝাপি করে নিজেকে কষ্ট দিচ্ছ ? তুমি নিজের থেকে গন্তব্যে পৌঁছোতে পারবে না, আমিই তোমার মজবুত Bridge, কেবলমাত্র আমিই তোমাকে তোমার গন্তব্যে পৌঁছে দিতে পারি।

তোমাকে আমি সৃষ্টি করেছি, তাই আমি তোমার প্রয়োজন সকল জানি, আর শুধুমাত্র আমিই তোমার সকল প্রয়োজন মেটাতে পারি। এই জন্য তোমার সকল প্রয়োজনে আমার ওপর নির্ভর করতে শেখো।

যীশু বলেছেন মথি ১১ অধ্যায় ২৮ পদে - হে পরিশ্রান্ত ও ভারাক্রান্ত লোক সকল, আমার নিকটে আইস, আমি তোমাদিগকে বিশ্রাম দিব। 

তো যীশু এখানে বলতে চাইছেন – তুমি নিজের জীবনের সমস্ত কিছুর ভার আমার কাছে সমর্পণ করো আর বিশ্রাম করো, নিজের পরিকল্পনা ত্যাগ করো ও আমার পরিকল্পনায় চলো। আমার ওপর বিশ্বাস রাখো, আমি জানি তোমার জীবনে আমার কি করা উচিত, কেবলমাত্র আমিই জানি যে, তুমি কীভাবে শান্তি পাবে। আমিই তোমার জীবনকে একটি সুন্দর আকার দিতে পারি, আমি একজন ভালো কুমোর, তোমাকে একটি সুন্দর ও উপযোগী পাত্র তৈরি করব। মানুষ তোমার প্রশংসাও করবে ও তোমার ঠাণ্ডা জল পান করে তারা তৃপ্তিও পাবে।

                                        ঈশ্বর ছাড়া মানুষ অসম্পূর্ণ, আর কেবল ঈশ্বরই সেই অসম্পূর্ণতাকে দূর করতে পারেন।

এটা একদিক থেকে ভালো, কারণ, যদি মানুষ নিজের থেকেই সব কিছু করতে পারত, তার মধ্যে অহংকারের কোনও সীমা থাকত না, আর অহংকারই সমস্ত পাপের মূল।

শয়তান যখন স্বর্গদূত ছিল, তখন তার মধ্যে অহংকার চলে এসেছিল, যার জন্য সে ঈশ্বরের সাথে বিদ্রোহ করে। সেই জন্য তাকে স্বর্গ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।

আজ এই পৃথিবীতে দুই প্রকার মানুষ আছে –

·      এক প্রকার তারা, যারা বাচ্চাদের মতো সারাজীবন লাফাঝাপি করে কিন্তু কোনও ফল পাড়তে পারে না।

·      অন্য প্রকার তারা, যারা একটা সময় পরে হার স্বীকার করে নেয় এবং বুঝে যায় যে, কেবল ঈশ্বরই তাকে ফল দিতে পারেন, আর সেই জন্য তারা ঈশ্বরের ওপর নির্ভর হওয়া শিখে যায়। এতে লাফাঝাপি করে নিজেকে কষ্ট দিতে হয় না।

এখানে এটা বলা হচ্ছে না যে, মানুষকে কোনও কাজ করার

প্রয়োজন নেই, মানুষকে তো কাজ-কর্ম করতেই হবে, তা চাকরী হোক বা কোনও ব্যাবসা। কিন্তু তার নির্ভরতা সবসময় যীশুর ওপর থাকা দরকার, নিজের সব প্রয়োজনের জন্য তাকে যীশুর কাছে প্রার্থনা করার প্রয়োজন রয়েছে।

যখনই কোনও বিশ্বাসী নিজের জীবনের এমন কোনও প্রান্তে পৌঁছে যান, যেখান থেকে গভীর খাত শুরু হচ্ছে, অর্থাৎ আগে যাওয়ার আর কোনও রাস্তা তিনি খুঁজে পাচ্ছেন না, যখন তিনি বুঝতে না পারেন যে, কীভাবে ওপারে যাওয়া যাবে! তখন তার উচিত নিজের চোখ বন্ধ করে সত্যে ও আত্মায় যীশুর কাছে প্রার্থনা করা। প্রভু যীশুই তাকে আগে যাওয়ার পথ খুলে দেবেন।

আপনার প্রয়োজন মেটানোর Bridge তো তিনি সৃষ্টির পূর্বেই তৈরি করে রেখেছেন, কিন্তু সেটা আপনার সামনে তখনই আসবে, যখন আপনি সম্পূর্ণ বিশ্বাসের সাথে তার ওপর নির্ভর করতে শিখবেন।

জগতসংসারের কথায় কান দিলে চলবে না, নিজের বুদ্ধির ওপর নির্ভর হলেও চলবে না, যীশুর ওপর নির্ভর হতে হবে। যীশুর Bridge আপনার জন্য তৈরি হয়ে যাবে, আর আপনি সহজেই অন্য প্রান্তে পৌঁছোতে পারবেন। যখন আপনি পেছনে ফিরে দেখবেন, তখন আপনার বিশ্বাসই হবে না যে, আপনি এত গভীর খাত এত সহজেই পার করে ফেলেছেন।

                                        যারা প্রভু যীশুকে জানে না বা তাকে স্বীকার করে না, তারা যীশুর সেই আরামদায়ক Bridge-এর উপলব্ধি কখনই করতে পারবে না। তারা জীবনের দৌড়ে ক্লান্ত হয়ে পরবে ও নিরাশ হয়ে পরবে, যতই তাদের টাকা, পয়সা থাকুক বা নাম ডাক থাকুক, তারা কখনই প্রভু যীশুর Bridge ছাড়া সেই অনন্ত জীবনে প্রবেশ করতে পারবে না।

                                        হতে পারে আজ আপনার জীবনে ঘোর অন্ধকার নেমে এসেছে এবং সামনে অনেক গভীর গর্ত, সেটিকে পার করার কোনও উপায় খুঁজে পাচ্ছেন না! কিন্তু যীশু তার প্রতিশ্রুতিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তাঁর Bridge আপনার জন্য তৈরি থাকবে, আপনাকে শুধু বিশ্বাসে প্রার্থনা করতে হবে এবং তাঁর নির্দেশ মতো তাঁর দেখানো রাস্তায় আপনাকে চলতে শুরু করতে হবে।

                                        শয়তান আপনাকে অন্য পথে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা তো অবশ্যই করবে কিন্তু বিশ্বাস প্রভু যীশুতে স্থির রাখা প্রয়োজন।


Tags:- 

Christian Articles, বাংলা খ্রীষ্টীয় নিবন্ধ, bsbbca, bibleshikshabhaskar, BSB Ministry, Bengali Christian Blog, Bangla Gospel, Bengali Gospel, Preaching in Bengali Language, Bible Based Articles, বাংলা প্রচার, বাংলা যীশুর প্রচার, Bangla Christiyo Christio Khristiyo Khristio Prochar, BSB Gospel, Gospel Articles, Bangla Nibondho, Gospel Online, Online Gospel, বাইবেল প্রচার, বাইবেলের বাক্য, Blogger, Jesus Christ, যীশু খ্রীষ্ট,


0 Comments