ইব্রীয় ৯ অধ্যায় ২৭ পদে লেখা আছে - আর যেমন মনুষ্যের নিমিত্ত এক বার মৃত্যু, তৎপরে বিচার নিরূপিত আছে,

প্রত্যেক মানুষের জন্য এটা নিশ্চিত যে, একদিন না একদিন আমাদের মৃত্যুর মুখোমুখি হতেই হবে, আর মৃত্যুর পর আমাদের অবশ্যই ঈশ্বরের বিচারাসনের সামনে দাঁড়াতে হবে।

আর এই চরম সত্য দুটির বিষয়ে মানুষ ভাবতেই চায় না। মানুষ মনে করে যে, তারা এই পৃথিবীতে সারাজীবনই থাকতে পারবে।

যাকোব ৪ অধ্যায় ১৪ পদে লেখা আছে - তোমরা ত কল্যকার তত্ত্ব জান না; তোমাদের জীবন কি প্রকার? তোমরা ত বাষ্পস্বরূপ, যাহা ক্ষণেক দৃশ্য থাকে, পরে অন্তর্হিত হয়।

ধরে নিন আপনি ৪-৫ দিনের জন্য অন্য একটি শহরে গেলেন, আর কোনও হোটেলে থাকার জন্য একটি রুম ভাড়া করলেন, আর আপনি নিজের ইচ্ছে মতো সেই রুমে নতুন রং করতে শুরু করলেন, দামী টিভি নিয়ে এলেন, নতুন ফ্রিজ নিয়ে এলেন, নতুন কার্পেট বিছালেন, বিছানায় নতুন গদি ও চাদর বিছালেন।

                    এইসব দেখে ওই হোটেলের ম্যানেজার আপনার কাছে এসে আপনাকে বললেন – আপনি এসব কি করছেন ?

                    আর আপনি ম্যানেজারকে বললেন – আমি এখানে নিজের সুবিধে মতো আরাম করে থাকতে চাই।

                    আপনার এই কথা শুনে ম্যানেজার আপনাকে বললেন – কি ???

আপনি কি পাগল হয়ে গেছেন ??? আপনি তো এখানে শুধু ৩-৪ দিনের জন্য এসেছেন, তারপর তো চলে যাবেন!

                    --- ঠিক এরকমই আমরা এই পৃথিবীতে কিছুকালের জন্যই এসেছি, তারপর আমাদের গন্তব্য অন্য কোথাও হবে।

যদি আমরা আমাদের পৃথিবীতে কাটানো কিছু সময়ের সাথে অনন্ত জীবনের তুলনা করি, তাহলে অনন্ত জীবনের তুলনায় এই পৃথিবীতে কাটানো জীবন অতি সামান্য। গড়ে আমাদের এই ৫০ থেকে ১০০ বছরের জীবন অনন্ত জীবনের সামনে কিছুই নয়।

                              আমাদের এই জীবন অনেকটাই ছোটো। নিজের সমস্ত কিছু এই জগতের পেছনে ব্যয় করা বন্ধ করুন, কেননা এই জগতসংসার ও এখানকার অভিলাষ আপনার ও আমার জন্য একদিন শেষ হয়ে যাবে।

                              প্রত্যেককেই একদিন না একদিন ঈশ্বরের সেই আদালতের সামনে হাজির হতে হবে, যেখানে ঈশ্বরই আপনার জন্য শেষ রায় দেবেন।

প্রকাশিত বাক্য ২০ অধ্যায় ১২ থেকে ১৩ পদে সাধু যোহন লিখেছেন – 12 আর আমি দেখিলাম, ক্ষুদ্র ও মহান্‌ সমস্ত মৃত লোক সেই সিংহাসনের সম্মুখে দাঁড়াইয়া আছে; পরে “কয়েকখান পুস্তক খোলা গেল”, এবং আর একখানি পুস্তক, অর্থাৎ জীবন-পুস্তক খোলা গেল, এবং মৃতেরা পুস্তকসমূহে লিখিত প্রমাণে “আপন আপন কার্য্যানুসারে” বিচারিত হইল। 13 আর সমুদ্র আপনার মধ্যবর্ত্তী মৃতগণকে সমর্পণ করিল, এবং মৃত্যু ও পাতাল আপনাদের মধ্যবর্ত্তী মৃতগণকে সমর্পণ করিল, এবং তাহারা প্রত্যেকে আপন আপন কার্য্যানুসারে বিচারিত হইল।

 

এই জন্য আপনি প্রত্যেকদিন ঘুমোতে যাওয়ার আগে ঈশ্বরকে জিজ্ঞাসা করুন যে, হে ঈশ্বর! আজকে আমার জীবন থেকে আপনি পুস্তকে কি কি লিখেছেন ?

                          যদি আপনি ভুল করে থাকেন বা কোনও পাপকার্য করে থাকেন, তাহলে অবশ্যই অনুতাপ করুন।

আমাদের অনেকবার এটা মনে হয় যে, আমরা যখন প্রভু যীশুর সামনে দাঁড়াবো, তখন বলব – হে প্রভু, তুমি তো জান যে আমি কত বছর তোমার সেবাকার্য করেছি, কত ভিডিও ইউটিউবে আপলোড করেছি, কত আত্মাকে জয় করেছি, ঈশ্বরের বাক্য কত অধিক পরিমানে মানুষকে শুনিয়েছি, ইত্যাদি। কিন্তু এরকম কিছুই আপনি বলতে পারবেন না,

কারণ, প্রকাশিত বাক্য ১ অধ্যায় ১৩ থেকে ১৭ পদে স্বর্গে প্রভু যীশুর দৃশ্যটি ঠিক কেমন, সে বিষয়ে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।

লেখা আছে – 13 সপ্ত সুবর্ণ দীপবৃক্ষ, ও সেই সকল দীপবৃক্ষের মধ্যে “মনুষ্যপুত্রের ন্যায় এক ব্যক্তি”; তিনি পাদপর্য্যন্ত পরিচ্ছদে আচ্ছন্ন, এবং “বক্ষঃস্থলে সুবর্ণ পটুকায় বদ্ধকটি14 তাঁহার মস্তক ও কেশ শুক্লবর্ণ মেষলোমের ন্যায়, হিমের ন্যায় শুক্লবর্ণ, এবং তাঁহার চক্ষু অগ্নিশিখার তুল্য15 এবং তাঁহার চরণ অগ্নিকুণ্ডে পরিষ্কৃত সুপিত্তলের তুল্য, এবং তাঁহার রব বহুজলের রবের তুল্য”16 আর তাঁহার দক্ষিণ হস্তে সপ্ত তারা আছে, এবং তাঁহার মুখ হইতে তীক্ষ্ণ দ্বিধার তরবারি নির্গত হইতেছে, এবং তাঁহার মুখমণ্ডল নিজ তেজে বিরাজমান সূর্য্যের তুল্য। 17 তাঁহাকে দেখিবামাত্র আমি মৃতবৎ হইয়া তাঁহার চরণে পড়িলাম।

 

                             সাধু যোহন, যিনি প্রভু যীশুর একজন খুব কাছের শিষ্য ছিলেন। আর যোহন প্রভু যীশুকে যতটা ভালোভাবে জানতেন, মনে হয় না ততটা তাঁর সম্বন্ধে কেউ জানতে পেরেছেন।

আর এই যোহনই যখন প্রভু যীশুর মহিমাময় রূপটি দেখেছিলেন, তখন তিনি প্রভুর পায়ে মৃতপ্রায় হয়ে পরেছিলেন।

আপনি একবার ভেবে দেখুন যে, আপনার ও আমার তাহলে কি অবস্থা হবে!

যখন আপনি প্রভু যীশুর সিংহাসনের সামনে দাঁড়াবেন, তখন আপনি আপনার পক্ষে কোনও উকিলকে দাড় করাতে পারবেন না, অথবা আপনার হয়ে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য আপনার কোনও আত্মীয়কেও সেখানে দাড় করাতে পারবেন না, এমনকি আপনার মণ্ডলীর পাস্টরকেও দাড় করাতে পারবেন না, যিনি আপনার হয়ে প্রভুকে বলবেন যে, এই ব্যক্তি প্রত্যেক রবিবার গির্জায় আসত, দান দিত, প্রার্থনা করত, ভালো প্রচার করত, ইত্যাদি।

কোনও ধরণের কোনও অজুহাতই সেখানে কার্যকর হবে না।

                              তো প্রশ্ন এটাই যে, ঈশ্বর কি আমাদের পাপের ক্ষমা করবেন না ?

উত্তর হল – হ্যাঁ, অবশ্যই করবেন, যদি আপনি অনুতাপ করেন, পাপ থেকে মন ফেরান ও প্রভু যীশুতে জীবনযাপন করতে শুরু করেন।

                    পৃথিবীতে থাকাকালীন আমরা কোথায় যেতে চাই, সেই নির্ণয় আমাদের হাতেই রয়েছে। কিন্তু যখনই আমরা এই সংসার ত্যাগ করি, তখনই সেই নির্ণয় ঈশ্বরের হাতে চলে যায়, আর তাঁর নির্ণয়ই শেষ নির্ণয়।

                    আজকালকার অনেক মণ্ডলীগুলিতে এখন এটাই শেখানো হয় যে, ঈশ্বর আমাদের সব কিছুই প্রদান করেন, তাই আপনার যা চাওয়ার, তা চেয়ে নিন। অনেকেই রয়েছেন, যারা নিজেদেরকে ঈশ্বরের দাস হিসেবে জগতের কাছে প্রকাশ করতে চান না, তারা ঈশ্বরের দ্বারা মনোনীত বিশেষ কোনও ব্যক্তি হিসেবেই জগতের কাছে নিজেদের প্রকাশ করতে ভালোবাসেন, প্রভু যীশুকেই তারা নিজেদের দাস বানিয়ে রেখেছেন আর তাঁর কাছে প্রার্থনাস্বরূপ নয়, যেন আদেশস্বরূপ সমস্ত কিছু দাবী করে থাকেন। তারা লোকদের কাছে শুধু ঈশ্বরের অনুগ্রহেরই প্রচার করে থাকেন। বেশিরভাগ মণ্ডলীই ঈশ্বরের কঠোরতা ও গম্ভীরতার বিষয়ে প্রচার করতে পছন্দ করে না, তারা এই বিষয়টিকে বেশী গুরুত্ব দেয় না বা প্রচার করে না যে, একদিন ঈশ্বরের দয়া ও অনুগ্রহ আর থাকবে না, নরকের আগুনে জ্বলতে থাকা মানুষদের প্রার্থনা ঈশ্বর কর্ণপাত করবেন না।

                              সেই মেষশাবক, যিনি জগতের পাপের জন্য ক্রুশে প্রাণ দিয়েছিলেন, আর তিনিই একজন শক্তিশালী যোদ্ধারূপে জগতের বিচার করার জন্য এই পৃথিবীতে আসতে চলেছেন, এই বিষয়ে মণ্ডলীগুলি বিশ্বাসীদের কতটা সতর্ক করে ?

তারা শুধু Blessings, Gifts of God, ধন ও দৌলতের বিষয়ে প্রচার করে থাকে।

                              যদি আপনার মণ্ডলীর প্রচারক বা পাস্টর খ্রীষ্টের ওই প্রতাপের সাথে আগমনের বিষয়ে সতর্ক না করে থাকেন, তাহলে আপনাকে সাবধান হতে হবে, কারণ আপনার প্রচারক আপনাকে ভুল পথে চালিত করছেন।

উপদেশক ১২ অধ্যায় ১৩ থেকে ১৪ পদে লেখা আছে – 13 আইস, আমরা সমস্ত বিষয়ের উপসংহার শুনি; ঈশ্বরকে ভয় কর, ও তাঁহার আজ্ঞা সকল পালন কর, কেননা ইহাই সকল মনুষ্যের কর্ত্তব্য 14 কারণ ঈশ্বর সমস্ত কর্ম্ম এবং ভাল হউক, কি মন্দ হউক, সমস্ত গুপ্ত বিষয়, বিচারে আনিবেন।

তাই আমার প্রিয় বন্ধুরা,

সময় থাকতে অনুতাপ করুন, কারণ - প্রভু আসছেন।


Tags:- 

Christian Articles, বাংলা খ্রীষ্টীয় নিবন্ধ, bsbbca, bibleshikshabhaskar, BSB Ministry, Bengali Christian Blog, Bangla Gospel, Bengali Gospel, Preaching in Bengali Language, Bible Based Articles, বাংলা প্রচার, বাংলা যীশুর প্রচার, Bangla Christiyo Christio Khristiyo Khristio Prochar, BSB Gospel, Gospel Articles, Bangla Nibondho, Gospel Online, Online Gospel, বাইবেল প্রচার, বাইবেলের বাক্য, Blogger, Jesus Christ, যীশু খ্রীষ্ট,


0 Comments