নরক এমন একটি স্থান, যেখানে অনন্তকাল ধরে আগুন জ্বলছে। মানুষ আজ নরকের বিষয়ে বেশী আলোচনা করতে পছন্দ করে না। খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের মধ্যে অনেক বড়ো বড়ো প্রচারকও আজ নরকের ভয়ানক সত্যতা মানুষের কাছে অতটা তুলে ধরেন না, তারা কেবল ধন-দৌলত, বিলাসিতা, শারীরিক সুস্থতা প্রাপ্তি ও ঈশ্বরের অনুগ্রহের বিষয়গুলিই তুলে ধরেন।

আজকাল খ্রীষ্ট বিশ্বাসীরা ঠিক যেমন প্রচার শুনতে পছন্দ করেন, প্রচারকেরাও ঠিক সেরকম প্রচারই তাদের সামনে পরিবেশন করে থাকেন।

নরকের সত্যতাকে কেউই উপেক্ষা করতে পারে না, কোনও ব্যক্তি যদি ঈশ্বরের আজ্ঞাবহ না হন, তাহলে তার স্থান হবে জ্বলন্ত অগ্নি।

২ থিষলনীকীয় ১ অধ্যায় ৮ থেকে ৯ পদে লেখা আছে –

 8 এবং যাহারা ঈশ্বরকে জানে না ও যাহারা আমাদের প্রভু যীশুর সুসমাচারের আজ্ঞাবহ হয় না, তাহাদিগকে সমুচিত দণ্ড দিবেন। 9 তাহারা প্রভুর মুখ হইতে ও তাঁহার শক্তির প্রতাপ হইতে অনন্তকালস্থায়ী বিনাশরূপ দণ্ড ভোগ করিবে

 

প্রভু যীশু এবং তাঁর প্রেরিতগণও নরকের ভয়ানক সত্যতা সকলের সামনে তুলে ধরেছেন।

আসুন আমরা বাইবেল থেকে এমন কিছু পদ দেখি, যেগুলি থেকে আমরা নরকের ভয়াবহতা সম্বন্ধে আরও বিস্তারিত জানতে পারব।

মথি ১৩ অধ্যায় ৪১ থেকে ৪২ পদ

41 মনুষ্যপুত্র আপন দূতগণকে প্রেরণ করিবেন; তাঁহারা তাঁহার রাজ্য হইতে সমস্ত বিঘ্নজনক বিষয় ও অধর্ম্মাচারীদিগকে সংগ্রহ করিবেন42 এবং তাহাদিগকে অগ্নিকুণ্ডে ফেলিয়া দিবেন; সেই স্থানে রোদন ও দন্তঘর্ষণ হইবে।

মথি ২৫ অধ্যায় ৪১ পদ

পরে তিনি বামদিকে স্থিত লোকদিগকেও বলিবেন, ওহে শাপগ্রস্ত সকল, আমার নিকট হইতে দূর হও, দিয়াবলের ও তাহার দূতগণের জন্য যে অনন্ত অগ্নি প্রস্তুত করা গিয়াছে, তাহার মধ্যে যাও।

 

নরক প্রধানত মানুষের জন্য তৈরী করা হয়নি, বরং দিয়াবল অর্থাৎ শয়তান ও তার দূতেদের জন্য তৈরী করা হয়েছে, কিন্তু মানুষ ঈশ্বরের থেকে দূরে সরে গিয়ে নিজেরাই নরককে তাদের গন্তব্যস্থল হিসেবে বেঁছে নেয়, আর সেই নরক এমন একটি জায়গা, যেখানে কেবল রোদন ও দন্তঘর্ষণ হবে।

প্রকাশিত বাক্য ১৯ অধ্যায় ২০ পদে লেখা আছে –

তাহাতে সেই পশু ধরা পড়িল, এবং যে ভাক্ত ভাববাদী তাহার সাক্ষাতে চিহ্ন-কার্য্য করিয়া পশুর ছাবধারী ও তাহার প্রতিমার ভজনাকারীদের ভ্রান্তি জন্মাইত, সেও তাহার সঙ্গে ধরা পড়িল; তাহারা উভয়ে জীবন্তই প্রজ্বলিত গন্ধকময় অগ্নিহ্রদে নিক্ষিপ্ত হইল।

 

বাইবেল বলে মানুষের মৃত্যু কেবলমাত্র একবার হয় না, বরং দুবার হয়।

প্রকাশিত বাক্য ২০ অধ্যায় ১৪ থেকে ১৫ পদে লেখা আছে –

14 পরে মৃত্যু ও পাতাল অগ্নিহ্রদে নিক্ষিপ্ত হইল; তাহাই, অর্থাৎ সেই অগ্নিহ্রদ, দ্বিতীয় মৃত্যু। 15 আর জীবন-পুস্তকে যে কাহারও নাম লিখিত পাওয়া গেল না, সে অগ্নিহ্রদে নিক্ষিপ্ত হইল।

প্রকাশিত বাক্য ১৪ অধ্যায় ১১ পদে লেখা আছে –

তাহাদের যাতনার ধূম যুগপর্য্যায়ের যুগে যুগে উঠে”; যাহারা সেই পশু ও তাহার প্রতিমূর্ত্তির ভজনা করে, এবং যে কেহ তাহার নামের ছাব ধারণ করে, তাহারা দিবাতে কি রাত্রিতে কখনও বিশ্রাম পায় না।

এই সমস্ত বাক্যগুলি কখনই নরককে একটি বিলাসবহুল স্থান হিসেবে উপস্থাপিত করে না, বরং একটি ভয়ানক যন্ত্রণাময় স্থান হিসেবেই উপস্থাপিত করে।

মানুষ আজ কল্পনাও করতে পারছে না যে, তারা যদি ঈশ্বরকে আজও উপেক্ষা করে চলে, তাহলে তাদের শেষ পরিনতি কি হতে চলেছে!

ইচ্ছাকৃতভাবে মানুষ এই জাগতিক সুখাভিলাসের পেছনেই তাদের সময় ও জীবন অতিবাহিত করে, তারা মনে করে মৃত্যু মানে সব কিছুরই সমাপ্তি, কিন্তু বিষয়টি তেমন নয়।

মৃত্যুর পর যেমন প্রভু যীশুতে বিশ্বাস দ্বারা অনন্ত জীবন রয়েছে, ঠিক তেমনই প্রভু যীশুর প্রতি অবিস্বাস দ্বারা অনন্তকালীন শাস্তিও রয়েছে।

অনেকে প্রশ্ন করে থাকেন যে, আত্মার তো কোনও শরীর হয় না, তাহলে আত্মা কীভাবে নরকীয় যন্ত্রণা অনুভব করতে পারবে ?

এর উত্তর হল – সকলের দেহেরই পুনরুত্থান ঘটবে, সে বিশ্বাসী হোক বা অবিশ্বাসী।

ঈশ্বর সকলকেই একটি নতুন শরীর উপহার দেবেন, কিন্তু যারা প্রভু যীশু দ্বারা পরিত্রাণ লাভ করেছে, তাদের পুনরুত্থান হবে অনন্ত জীবনের জন্য, আর যারা ঈশ্বরকে উপেক্ষা করে তাদের জীবন অতিবাহিত করেছে এবং প্রভু যীশুতে বিশ্বাস করেনি, তাদের পুনরুত্থান হবে অনন্তকালের দণ্ডের জন্য।

যেসমস্ত লোকেদের নরকে নিক্ষিপ্ত করা হবে, তারা চাইলেও সেখান থেকে বের হয়ে আসতে পারবে না, সেই জ্বলন্ত অগ্নির যন্ত্রণাভোগের সময়কালের কোনও শেষ বা অন্ত নেই।

টাকা-পয়সা ও ধন-দৌলতের সাহায্যে মানুষ জাগতিক শাস্তির হাত থেকে রক্ষা পেলেও ঈশ্বরের দেওয়া শাস্তির হাত থেকে কখনই রক্ষা পাবে না।

ঈশ্বরের কাছে নরক সম্বন্ধে মানুষের বিচারধারার কোনও মূল্য নেই, কেননা পবিত্র বাইবেলে ঈশ্বর নরকের সত্যতা সমগ্র জগতের সামনে ইতিমধ্যেই প্রকাশ করেছেন।

অনেকে মনে করেন যে, নরক বলে এমন কোনও জায়গার অস্তিত্বই নেই, আবার অনেকে বলেন – ঈশ্বর তো এত দয়ালু, তিনি কীভাবে আমাদের নরকে নিক্ষিপ্ত করতে পারেন ?

আবার অনেকে মনে করেন, আমরা এই জগতেই নরক যন্ত্রণা ভোগ করছি।

কিন্তু বন্ধুরা, শয়তান মানুষকে এভাবেই ভুল বুঝিয়ে চলেছে, সে তার সাথে আমাদেরকেও নরকে নিয়ে যেতে চায়, অর্থাৎ ঈশ্বরের থেকে দূরে সরিয়ে দিতে চায়।

     আপনারা যারা প্রভু যীশুতে বিশ্বাস করে পরিত্রাণ লাভ করেছেন, তাদেরকেও আজ সতর্ক হবার প্রয়োজন রয়েছে, কেননা শয়তান আমাদেরকেই সব থেকে বেশী গ্রাস করতে চেষ্টা করে। আমাদের উচিত, যেন আমরা প্রচারকের প্রচারের তুলনায় বাইবেলের বাক্যকে বেশী গুরুত্ব দিই। প্রচারকেরা নিজেদের চিন্তাধারা ব্যক্ত করতে পারেন, কিন্তু পবিত্র বাইবেল কখনই কোনও মানুষের চিন্তাধারাকে ব্যক্ত করে না, বরং ঈশ্বরের চিন্তাধারাকেই ব্যক্ত করে।

মনে রাখবেন, আপনার প্রচারক শেষকালে আপনার বিচার করবেন না, কিন্তু প্রভু যীশু আপনার বিচার করবেন, তাই সাবধান! ঈশ্বরের বাক্যকে যাচাই করতে কখনই ভুলে যাবেন না।

 

Tags:- 

Christian Articles, বাংলা খ্রীষ্টীয় নিবন্ধ, bsbbca, bibleshikshabhaskar, BSB Ministry, Bengali Christian Blog, Bangla Gospel, Bengali Gospel, Preaching in Bengali Language, Bible Based Articles, বাংলা প্রচার, বাংলা যীশুর প্রচার, Bangla Christiyo Christio Khristiyo Khristio Prochar, BSB Gospel, Gospel Articles, Bangla Nibondho, Gospel Online, Online Gospel, বাইবেল প্রচার, বাইবেলের বাক্য, Blogger, Jesus Christ, যীশু খ্রীষ্ট,


0 Comments